বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

অজান্তেই থাইরয়েড বাড়িয়ে দিতে পারে যেসব খাবার

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১০ নভেম্বর ২০২৫ | ১৪

আজকাল থাইরয়েডের সমস্যা ক্রমেই সাধারণ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। ওজন বেড়ে যাওয়া, চুল পড়া, ক্লান্তি বা ঘুমের ব্যাঘাত—এসব উপসর্গের পেছনে থাকতে পারে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় আমাদের প্রতিদিনের খাবারই নীরবে থাইরয়েড সমস্যাকে আরো জটিল করে তোলে।

তাই সচেতনভাবে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ।
চলুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কোন খাবারগুলো থাইরয়েডের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে—

ময়দার পাউরুটি ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট

ময়দার তৈরি খাবারে ফাইবার কম থাকে, অথচ রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেশি। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সৃষ্টি করে এবং থাইরয়েডগ্রন্থির কাজ ব্যাহত করে। তা ছাড়া গ্লুটেনযুক্ত খাবার অনেকের ক্ষেত্রে থাইরয়েডে প্রদাহ বা অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে।
 
আলুর চিপস ও ভাজাপোড়া

চিপস বা অন্যান্য ভাজা স্ন্যাকসে থাকে অতিরিক্ত লবণ, ট্রান্স ফ্যাট ও কৃত্রিম ফ্লেভার। এসব উপাদান শরীরে আয়োডিন শোষণে বাধা দেয়, যা থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত নোনতা খাবার শরীরে পানি ধারণ বাড়িয়ে দেয়, ফলে গলা ফুলে যাওয়া বা হরমোন ভারসাম্যের সমস্যা দেখা দেয়।

বাদাম

চিনাবাদাম ও কিছু প্রজাতির বাদামে গোইট্রোজেন নামের যৌগ থাকে, যা থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়।

যদিও বাদাম পুষ্টিকর, তবু থাইরয়েড রোগীদের অল্প পরিমাণে খাওয়াই নিরাপদ।
বাঁধাকপি, ব্রকলি ও ফুলকপি

এই ক্রুসিফেরাস সবজিগুলো ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর, কিন্তু কাঁচা অবস্থায় খেলে আয়োডিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। রান্না বা স্টিম করলে এই প্রভাব অনেকটাই হ্রাস পায়। তাই থাইরয়েড রোগীদের জন্য পরামর্শ—এই সবজি খেতে হলে ভালোভাবে রান্না করে খান।

কফি

অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার পরপরই কফি পান করেন, যা ভুল অভ্যাস।

কফির ক্যাফেইন ওষুধের শোষণ কমিয়ে দেয় এবং কর্টিসল হরমোন বাড়িয়ে ক্লান্তি সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ওষুধ খাওয়ার অন্তত ৩০–৪৫ মিনিট পর কফি পান করুন।
সোয়া ও টোফু

সোয়া দুধ, টোফু বা সোয়া সসের মতো খাবারে থাকা ফাইটোইস্ট্রোজেন থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে প্রভাব ফেলে এবং ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে। তবে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই, মাপমতো খাওয়া এবং ওষুধ খাওয়ার সময়ের মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান রাখা সবচেয়ে ভালো উপায়।

ভারসাম্যই মূল কথা

থাইরয়েড রোগীরা সব কিছু একেবারে এড়িয়ে না গিয়ে, বরং সঠিক পরিমাণে ও সঠিকভাবে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণও অত্যন্ত জরুরি।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor