দেহের অনেক সংক্রমণ শুরুতে আড়ালে থেকেই যায়, কারণ শরীর নিজেই সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে। অনেক সময় মানুষ জ্বর বা ব্যথা কমাতে পেইনকিলার খেয়ে নেন, ফলে উপসর্গ সাময়িকভাবে কমলেও আসল সমস্যাটি থেকে যায়। তাই শরীরের সূক্ষ্ম ও কম পরিবর্তনশীল লক্ষণগুলোর দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া জরুরি।
অতিরিক্ত ক্লান্তি, দুর্বলতা বা আলস্য অনুভব করা শুধু ঘুমের অভাবের কারণে নাও হতে পারে।
শরীর যখন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তখন ইমিউন সিস্টেমের ওপর চাপ পড়ে এবং শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়। পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরও যদি শক্তি ফিরে না আসে, তবে শরীরে কোনো লুকানো সংক্রমণ থাকতে পারে। হালকা জ্বর, ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগা বা রাতে ঘাম হওয়াও প্রাথমিক সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে। যেহেতু এগুলো তীব্র জ্বরের মতো নয়, তাই অনেকেই বিষয়টি উপেক্ষা করেন।
তবে কারণ ছাড়াই কয়েক দিন ধরে এসব উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। শরীরের বিভিন্ন অংশে অকারণে ব্যথা, পেশিতে টান বা জয়েন্টে হালকা অস্বস্তিও সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। অনেক সময় ফোলাভাবের কারণে এমনটা হয়, যা মানুষ স্ট্রেস বা ক্লান্তি ভেবে এড়িয়ে যায়। তবে এসব লক্ষণ যদি একসঙ্গে দেখা যায়, তাহলে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
হঠাৎ ক্ষুধা কমে যাওয়া, পেটে অস্বস্তি, হালকা বমিভাব বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও কেবল বদহজম নাও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে অন্ত্রের সংক্রমণ বা শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া পেটের সমস্যার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তাই এসব পরিবর্তন অবহেলা করা ঠিক নয়।
নাক বন্ধ থাকা, হালকা কাশি, গলায় খসখসে ভাব বা শ্বাসপ্রশ্বাসে সামান্য পরিবর্তন শুরুতে সাধারণ মনে হলেও যদি তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, তবে এটি ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
গলা, বগল বা কুঁচকির কাছে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া বোঝায় শরীর সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
একইভাবে, আঘাত ছাড়াই শরীরের কোনো অংশ লাল হয়ে যাওয়া বা উষ্ণ অনুভব হওয়াও সংক্রমণের ইঙ্গিত হতে পারে। লক্ষণগুলো ছোট হলেও এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, মাথা ভার লাগা বা ‘ব্রেন ফগ’ অনুভব করাও সংক্রমণের অংশ হতে পারে। শরীর দীর্ঘ সময় ধরে সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করলে তার প্রভাব মস্তিষ্ক ও মানসিক অবস্থার ওপর পড়ে। অনেক সময় একে মানসিক চাপ মনে করা হলেও প্রকৃত কারণ হতে পারে লুকানো সংক্রমণ।
Publisher & Editor