মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

দৈনন্দিন যেসব অভ্যাস ঘুমের সমস্যার কারণ, করণীয় কী?

প্রকাশিত: ০৩:১৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ |

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তার প্রভাব শুধু পরের দিনেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ক্লান্তি ও অবসাদ ছাড়াও অনিয়মিত ঘুম দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে নানা ধরনের ক্রনিক ও জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ে, যেগুলো নিয়মিত ও গভীর ঘুম হলে এড়ানো সম্ভব হতে পারত।

অনেকেরই রাতে সহজে ঘুম আসে না, আবার ঘুম এলেও তা হয় অগভীর।

কেন এমন হয়? এ বিষয়ে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মাইকেল ব্রুস জানান, ঘুমের আগে আমরা অজান্তেই এমন কিছু অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ি, যা মস্তিষ্ককে জেগে থাকার সংকেত দেয়। ফলে স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় থাকে এবং শরীর প্রয়োজনীয় শিথিল অবস্থায় পৌঁছাতে পারে না। এর ফলেই ঘুম আসতে দেরি হয়।

দেরিতে ভারী খাবার খাওয়া
ঘুমের ঠিক আগে ভারী বা মশলাদার খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে।

এতে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে এবং অ্যাসিডিটির সমস্যাও দেখা দিতে পারে, যা ঘুমে বাধা দেয়।
সমাধান: শোয়ার অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত।

ঘুমের আগে অতিরিক্ত চিন্তা
অনেকেই বিছানায় শুয়ে পরের দিনের কাজের পরিকল্পনা বা সারাদিনের ঘটনা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। এতে নানা দুশ্চিন্তা মাথায় ভিড় করে এবং মস্তিষ্ক আরো সক্রিয় হয়ে ওঠে।

শরীর ক্লান্ত হলেও মন শান্ত না থাকায় ঘুম আসে না।
সমাধান: ঘুমের আগে কয়েক মিনিট ধ্যান করুন। চোখ বন্ধ করে মন ভালো করে এমন কোনো বিষয় নিয়ে ভাবুন—পছন্দের কোনো মানুষের কথা, কোনো দর্শন বা ঈশ্বরচিন্তা। এতে মন শান্ত হবে এবং গভীর ঘুমে সাহায্য করবে।

ক্যাফেইন ও নিকোটিনের প্রভাব
সন্ধ্যা বা রাতে চা-কফি খাওয়ার অভ্যাসও ঘুমের সমস্যা বাড়াতে পারে।

ক্যাফেইন শরীরে ৬–৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে, যা স্নায়ুকে উত্তেজিত রাখে। একইভাবে ধূমপানের নিকোটিনও ঘুমে বাধা দেয়।
সমাধান: সন্ধ্যার পর চা-কফি ও ধূমপান এড়িয়ে চলুন। বদলে গরম পানিতে আদা, গোলমরিচ বা জিরা ভিজিয়ে পান করতে পারেন। এতে হজম ভালো হবে এবং মনও ফুরফুরে থাকবে।

ঘুমের সময় অনিয়মিত হওয়া
প্রতিদিন আলাদা আলাদা সময়ে ঘুমাতে গেলে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক বা দেহঘড়ির ছন্দ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে নির্দিষ্ট দিনে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাইলেও ঘুম আসে না।
সমাধান: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ছুটির দিনেও এই নিয়ম বজায় রাখলে শরীর দ্রুত মানিয়ে নেবে।

ঘুমের আগে ডিজিটাল পর্দা ব্যবহার
ঘুমের আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভির নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। এই হরমোন ঘুম আনার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
সমাধান: শোয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে সব ধরনের স্ক্রিন ব্যবহার বন্ধ করুন। ঘুম না এলে মোবাইলের বদলে একটি বই পড়ুন। এতে মানসিক চাপ কমবে এবং ঘুম আসতে সুবিধা হবে।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor