মরুভূমির ধনী দেশ কুয়েত যেখানে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ফল আমদানি করা হয়। আর সেই তালিকায় এবার যোগ হয়েছে বাংলার রসালো ফল। কুয়েতে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের মধু মাসের মৌসুমি ফল নিয়ে বিশেষ ‘ফল উৎসব’।
এশিয়ান সুপার শপ ২-র সহযোগিতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, কুয়েতের আয়োজনে এবং বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতের সমন্বয়ে এ ব্যতিক্রমী ফল উৎসবে অংশ নিয়েছেন কুয়েত পৌরসভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা, সংবাদকর্মী, বাংলাদেশি প্রকৌশলীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কুয়েতের সভাপতি জাহাঙ্গীর খান পলাশের সভাপতিত্বে ফল উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সুয়েক পৌরসভার নির্বাহী পরিচালক খালেদ সুলতান আল উচাইমি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মঈন উদ্দিন সরকার সুমন, ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ সভাপতি সারোয়ার্দী, প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, প্রকৌশলী জুলফিকার পথিক, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আ হ জুবেদ, নজরুল, মেহেদি, শহিদ প্রমুখ।
ফল উৎসবের সার্বিক সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ইসমাইল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার কালাম।
বাংলাদেশ ফল উৎসবে প্রথমবারের মতো অতিথিরা স্বাদ নিয়েছেন বাংলাদেশের রসালো ফল আম, কাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, লটকন, লিচু, ড্রাগনসহ নানা ফলের। বাংলাদেশের মধু মাসের ফলের মধ্যে দেশটির নাগরিকসহ অতিথিদের মন জয় করেছে আম্রপালি, কাঁঠালসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন ফল।
ফল উৎসবের প্রধান অতিথি সুয়েক পৌরসভা নির্বাহী পরিচালক খালেদ সুলতান আল উচাইমি বলেন, আমি এই প্রথম কুয়েতে বাংলাদেশের আম, ড্রাগন ফল আর কাঁঠাল খাচ্ছি। এক কথায় অসাধারণ। শতভাগ খাঁটি, স্বাদে ভরপুর। যদি সবসময় এসব ফল কুয়েতে আমদানি করা হয়, আমি নিশ্চিত সবাই ভালোবাসবে, আর বেশি করে চাইবে। বাংলাদেশ ও কুয়েত সরকার যদি সরকারিভাবে ফল আমদানির ব্যবস্থা করে, বড় বড় মার্কেটে এসব ফল পরিবেশন করা হয়, তাহলে কেউ যদি একবার খায়, বারবার খেতে চাইবে। বাংলাদেশের ফল সত্যিই বিশ্বমানের।
কুয়েত-বাংলাদেশ কৃষি-বাণিজ্যে এগিয়ে গেলে দুই দেশের মানুষই লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্থানীয় নাগরিকসহ অন্য দেশের অতিথিরা বলছেন, তারা এই প্রথমবার বাংলাদেশের আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন। এসব ফল যদি বাজারে নিয়মিত আসে, তারা আগ্রহ নিয়ে কিনবেন।
এক মিসরিয় অতিথি বলেন, বাংলাদেশের খাবার সত্যিই অনেক সুস্বাদু। আমি প্রথমবার বাংলাদেশের কাঁঠাল আর আম খেয়েছি। স্বাদ ছিল অসাধারণ। যদি বাণিজ্যিকভাবে এই ফল কুয়েতে রপ্তানি করা হয়, আমি নিশ্চিত সবাই পছন্দ করবে। এমন ফল বারবার খেতে মন চায়।
মরুর দেশে মৌসুমি ফলের উৎসবে এসে আনন্দিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা বলছেন, এমন আয়োজন যেন প্রতি বছর হয়, আরও বড় পরিসরে যেন হয়। তারা চান কুয়েতিরা, বিদেশিরা এসে বাংলাদেশের ফলের স্বাদ নিক।
আয়োজকরা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য শুধু ফল প্রদর্শন নয়, বাংলাদেশের কৃষিপণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরা। কুয়েতের মতো বাজারে নিয়মিত ফল সরবরাহ হলে এটি হবে কৃষকের জন্য বিশাল সুযোগ। বাংলাদেশের এসব ফল যদি নিয়মিত কুয়েতের বাজারে পাওয়া যায়, তাহলে চাহিদা বাড়বে বহুগুণ। এতে কেবল বাণিজ্য নয়, দুই দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বেরও এক মধুর উদাহরণ হবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
Publisher & Editor