যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি রাইস আহমদকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে তার প্রতিবেশী ড্যানিয়েল হোয়াইব্রোকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতবছরের ৫ অক্টোবর পূর্ব লন্ডনের নিউহ্যামের কাস্টমস হাউস এলাকায় ৫০ বছর বয়সী বৃটিশ-বাংলাদেশি রইস আহমদকে হত্যার দায়ে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। বুধবার ইংল্যান্ডের স্নেয়ার্সব্রুক ক্রাউন কোর্টে বিচার শেষে এই সাজা ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণাকালে বিচারক বলেন, ড্যানিয়েল বর্ণবাদী বিদ্বেষ প্রদর্শন করেছেন— যদিও এটিকে সম্পূর্ণভাবে বর্ণবাদী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলা যায় না। গ্রেপ্তারের পর হোয়াইব্রো ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের প্রতি এবং দুইজন পুলিশ কর্মকর্তার প্রতিও বর্ণবাদী গালিগালাজ করেছিলেন।
মেট পুলিশের স্পেশালিস্ট ক্রাইম ইউনিটের ডিটেকটিভ চিফ ইন্সপেক্টর সামান্থা টাউনসেন্ড বলেন, এই কঠিন সময়ে আমার চিন্তা-ভাবনা ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে রয়েছে। আমি আশা করি এই সাজা তাদের জন্য সামান্য হলেও শান্তি ও ন্যায়বিচার বয়ে আনবে।
আদালতের শুনানি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ অক্টোবর একই ফ্ল্যাট ব্লকে বসবাসকারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বিরোধ হয়। রাইস আহমদ তার স্ত্রীকে জানান, তিনি যখন বাসা থেকে বের হচ্ছিলেন তখন হোয়াইব্রো তাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিল।
ধারণা করা হয়, ফ্ল্যাটের মূল দরজা খোলা রাখা নিয়ে তাদের মধ্যে এ বিরোধ তৈরি হয়। পরে রাইস তার বন্ধুকে ডাকেন এবং দু’জনে একসঙ্গে ফ্ল্যাটে ফিরে এসে হোয়াইব্রোকে দেখতে পান। তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়, এরপর হোয়াইব্রো নিজের রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভেতরে হাত বাড়িয়ে একটি ছুরি নেন। তখন সে চিৎকার করে বলতে থাকে, “আমি তোমাকে মেরে ফেলব” এবং রাইসের বন্ধুকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পান, হোয়াইব্রো এরপর রাইসের দিকে ছুটে আসেন এবং তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। রাইস মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও তিনি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। আত্মরক্ষার জন্য রাইস একটি স্টিয়ারিং লক হাতে নিলেও হোয়াইব্রো তার ওপর হামলা চালতে থাকে। এতে রাইসের কিশোর ছেলেও আহত হয়। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। হোয়াইব্রোকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ২২ আগস্ট স্নেয়ারসব্রুক ক্রাউন কোর্টে হত্যার দায়ে হোয়াইব্রো দোষী সাব্যস্ত হন।
Publisher & Editor