শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বা নারীর ডেঙ্গু হলে সতর্কতা

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ২৪ জুলাই ২০২৫ |

চলছে ডেঙ্গুর সময়। প্রতিদিনই বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির খবর আসছে। ডেঙ্গু জ্বরে শিশু, বয়স্ক ও গর্ভবতীরা আক্রান্ত হলে ঝুঁকি তৈরি হয় বেশি। তাই তাঁদের জন্য বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে অতিমাত্রায় বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামান্দ্য ও চোখে ঝাপসা লাগার মতো লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এ সময় বারবার বমির কারণে এমনিতেই একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এর ওপর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে আরও বেশি পানিশূন্যতা তৈরি হয় এবং রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এ কারণে এমনকি গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।

গর্ভবতী নারীদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি অন্যদের তুলনায় কম। এ জন্য তাঁদের ভোগান্তিও বেশি। তাই এ সময় জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে আক্রান্ত হলে মায়ের কাছ থেকে সরাসরি প্ল্যাসেন্টার মাধ্যমে তা ভ্রূণকেও সংক্রমিত করতে পারে। এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে প্রি-এক্লাম্পসিয়া দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার হলে বিভিন্ন অঙ্গে রক্তপাত গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি ডেঙ্গুর কারণে ভ্রূণের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে বা মৃত সন্তান প্রসব হতে পারে। ডেঙ্গুর কারণে সময়ের আগে প্রসববেদনা শুরু হতে পারে, গর্ভের শিশুর নড়াচড়া কমে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে জটিলতার কারণে সিজারিয়ান সেকশনের প্রয়োজন দেখা দেয়। গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু মারাত্মক রূপ নিলে মায়ের জীবনও বিপন্ন হয়। শিশুর জন্মের পর রক্তক্ষরণের সমস্যা, ফুসফুসের ইনফেকশন ও অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

সতর্ক থাকুন
একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর যদি ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করা দরকার। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল ব্যতীত কোনো ওষুধ সেবন করবেন না। গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে সাধারণত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়, বিশেষ করে যদি হেমোরেজিক ডেঙ্গু বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা যায়। রোগীর হাইড্রেশন ঠিক রাখতে হবে। জ্বর ও ব্যথানাশক হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি নিতে হবে। প্রয়োজনে রক্ত ও প্ল্যাটিলেট দিতে হতে পারে। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত একজন মেডিসিন ও একজন গাইনি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিতে হবে। শিশুর নড়াচড়া খেয়াল করতে হবে। প্রস্রাবের মাত্রা কমে গেলে বা রক্তচাপ কমে গেলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন এবং গর্ভাবস্থায় রক্ত নেওয়া অনুচিত।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor