রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

হঠাৎ অতিরিক্ত ঘেমে যাচ্ছেন? দেখুন তো, এসব রোগের কারণে কি না

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ১৩ জুলাই ২০২৫ |

একই তাপমাত্রায় সবার শরীরে সমান ঘাম হয় না। যাঁদের ঘামগ্রন্থি বেশি সক্রিয়, তাঁদের বেশি ঘাম হয়। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঘামতে থাকলে ও অস্বস্তিবোধ করলে চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে। মাত্রাতিরিক্ত ঘাম অন্য রোগের লক্ষণও হতে পারে।

হাইপারহাইড্রোসিস: এ রোগে ঘামগ্রন্থি অত্যধিক কার্যকর থাকার ফলে অতিরিক্ত ঘাম হয়। এর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। হাত–পা অতিরিক্ত ঘামের জন্য যদি প্রাত্যহিক কাজ ব্যাহত হয়, সে ক্ষেত্রে কিছু লোশন ও মুখে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়।

থাইরোটক্সিকসিস: থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসরণ বেড়ে গেলে এ রোগ হয়। অতিরিক্ত ঘামের পাশাপাশি বুক ধড়ফড় করা, ওজন কমে যাওয়া ও গলা ফুলে যাওয়া এর অন্যতম লক্ষণ। এমন উপসর্গ থাকলে শিগগিরই হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

পোস্টমেনোপজাল সিনড্রোম: নারীদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পর বা এর পারিপার্শ্বিক সময়ে শরীরে মেয়েলি হরমোনের ঘাটতি হয়। এ কারণে অনেকেই অতিরিক্ত ঘাম, অস্থিরতা, মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হওয়া, ক্লান্তি ও মানসিক বিষাদে ভোগেন। সঠিক চিকিৎসায় এ ধরনের উপসর্গ অনেকটাই নিরাময়যোগ্য।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া: ডায়াবেটিক ব্যক্তি, বিশেষ করে যাঁরা ইনসুলিন নিচ্ছেন অথবা অনেক ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁরা হঠাৎ খুব ঘামতে থাকলে, দৃষ্টি ঘোলা হয়ে এলে, বুক ধড়ফড় করলে বা মাথা ঘোরাতে থাকলে অতি দ্রুত রক্তের শর্করা মাপুন। শর্করা ৩ দশমিক ৯ মিলিমোলের নিচে থাকলে এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া। দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ান, ১৫ মিনিট পর আবার শর্করা মাপুন। স্বাভাবিক আসার পর দৈনন্দিন স্বাভাবিক খাবার দিন।

হার্ট অ্যাটাক: বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের মূল উপসর্গ। তবে অনেক সময় দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে ভুগছেন, এমন ব্যক্তি বুকে ব্যথা ছাড়াও হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন। হঠাৎ প্রচণ্ড ঘাম, বমি বমি ভাব ও শারীরিক অস্বস্তি হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

ফিওক্রোমোসাইটোমা: এটি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির একটি টিউমার। অতিরিক্ত এপিনেফ্রিন ও নর–এপিনেফ্রিনজাতীয় হরমোন নিঃসরণের কারণে হঠাৎ তীব্র ঘাম, মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় করা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব ও পেটের ব্যথা হয়। কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় এসব উপসর্গ। তারপর রোগী এমনিতেই ভালো বোধ করতে শুরু করেন।

এ ছাড়া কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, ব্যথা ও মাইগ্রেনের ওষুধ, স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধের কারণেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে। সব ধরনের ঘাম অস্বাভাবিক নয়, তবে কিছু অতিরিক্ত ঘাম নীরব রোগের উপসর্গ হতে পারে।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor