মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

মাসিক না হওয়ার কারণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ |

বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে একটা নির্দিষ্ট ধারায় নারীর মাসিক চক্র চলতে থাকে। মেনোপজের আগপর্যন্ত এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয়ও ঘটতে পারে। কেন হয় এমন? এ প্রসঙ্গে স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. আনিকা তাবাস্‌সুম-এর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন রাফিয়া আলম।

মেনোপজের আগে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ
গর্ভধারণ ও স্তন্যদান।

জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিল কিংবা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি ব্যবহার।

অতিরিক্ত কম বা বেশি ওজন, অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম কিংবা অতিরিক্ত মানসিক চাপ।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি কিংবা আধিক্য, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কিংবা অন্য যেসব রোগের কারণে হরমোনের তারতম্য হয়।

ডিম্বাশয়ের টিউমার কিংবা ডিম্বাশয় বা জরায়ুতে কোনো অস্ত্রোপচার।

উচ্চ রক্তচাপ, অ্যালার্জি, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ব্যবহৃত ওষুধ।
কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি।

ডিঅ্যান্ডসির (ডায়ালেশন ও কিউরেটেজ নামের একটি অস্ত্রোপচারপদ্ধতি) মাধ্যমে গর্ভপাত।

কৈশোরে মাসিক শুরু না হওয়ার কারণ
নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছেও যাঁর মাসিক শুরু হয়নি, তাঁর জন্য কারণটা হতে পারে জিনগত। নারীর জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে যেসব গ্রন্থি, সেসবের অস্বাভবিকতাও থাকতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে। যোনিপথ বা অন্যান্য প্রজনন অঙ্গের গঠনগত ত্রুটিও থাকতে পারে।

কত দিন মাসিক না হওয়া অস্বাভাবিক
দু–এক মাস যদি মাসিক না হয়, তাতে ভয়ের কিছু নেই। কত দিন মাসিক না হওয়া অস্বাভাবিক, অর্থাৎ কখন নেবেন চিকিৎসকের পরামর্শ, জেনে নেওয়া যাক।

১৪ বছর বয়সে পৌঁছেও যদি কারও মাসিক শুরু না হয় এবং বয়ঃসন্ধির অন্য কোনো চিহ্নও না দেখা যায়।

বয়ঃসন্ধির অন্যান্য চিহ্ন থাকলে অবশ্য ১৬ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১৬ বছরে পৌঁছে মাসিক না হলে বিষয়টিকে অস্বাভাবিক ধরে নিতে হবে।

যাঁর নিয়মিত মাসিক হয়, তাঁর যদি অন্তত তিন মাস মাসিক বন্ধ থাকে, তাহলে সেটির কারণ খুঁজতে হবে।

যাঁর মাসিক অনিয়মিত, তাঁর ক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস মাসিক বন্ধ থাকলে সেটিকে অস্বাভাবিকভাবে মাসিক বন্ধ হওয়া বলে ধরে নিতে হবে।

যদি থাকে অস্বাভাবিকতা
একজন নারীর সুস্থতার জন্য নিয়মিত মাসিক হওয়া খুবই জরুরি। যদি মাসিকে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, অস্বাভাবিকভাবে মাসিক বন্ধ থাকে কিংবা অনিয়মিত মাসিক হয়, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণটা খুঁজে বের করবেন। সে অনুযায়ীই হবে চিকিৎসা।

কারও মাসিক বন্ধ থাকার চিকিৎসার ক্ষেত্রে জীবনধারার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ। কারও প্রয়োজন হরমোন থেরাপি। অল্প কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি বা শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor