বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভোরের স্বপ্ন কি আসলেই সত্যি হয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

প্রকাশিত: ১২:৪০, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ |

সবাই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। কিছু স্বপ্ন পূরণ হয়। আবার কিছু অধরাই থেকে যায়। জেগে জেগে যখন কেউ অসম্ভব কিছু ভাবতে থাকে তখন তাকে দিবাস্বপ্ন বলে। আসলে স্বপ্ন দেখার নির্দিষ্ট সময় নেই। তবুও বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ভোরের স্বপ্ন সত্য হয়। আসলেই কি তাই? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কী বলেন? 

সম্প্রতি স্পিরিচুয়াল হিলার কাভ্যাল হাথি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সকালে যে স্বপ্ন দেখা দেয় তাকে ‘ভেন্টিং ড্রিমস’ বলে। এটা হলো স্বপ্নের বর্জ্য।’ 

কাভ্যালের মতে, আমাদের মস্তিষ্ক ভোরবেলা সেই স্বপ্নই দেখে, যার আর প্রয়োজনীয়তা নেই আমাদের জীবনে। তাই ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয় না।

ভারতের নিউরোসাইকিয়াট্রিস্ট ড. শ্রীকান্ত শ্রীনিবাস বলেছেন, ‘ভোরের স্বপ্ন মোটামুটি ভোর ৪টা থেকে ৬টা বা ৭টার মধ্যে দেখা যায়। এটি ঘুমের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে ঘটে যা র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট বা আরইএম নামে পরিচিত’। 

চিকিৎসকের মতে, ঘুমের সময়ে একাধিক বার এই আরইএম পর্যায় আসে। ভোরে স্বপ্ন দেখাটা ঘুমের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ আরইএম পিরিয়ড। ঘুম ভাঙার কিছুক্ষণ আগে এটি ঘটে এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় প্রায় ৯০ মিনিট বা তার বেশি। রাতের অন্যান্য সময়ের স্বপ্ন মনে না থাকলে এই সময়কালে দেখা স্বপ্নটা মনে থাকে। 

ড. শ্রীনিবাসের মতে, এই আরইএম পিরিয়ডে মানুষের আবেগ, মানসিক অবস্থা এবং অতীতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্বপ্নে ভেসে ওঠে। এই নির্দিষ্ট সময়ে মস্তিষ্কের কিছু অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্কে স্মৃতিশক্তি ধরে রাখে যে অংশ, আবেগ চালনা করে যে অংশ এবং মস্তিষ্কের পিছনে অবস্থিত দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী কিছু অংশ। এই কারণে ভোরবেলা আমরা যে সব স্বপ্ন দেখি, সেগুলো আবেগপ্রবণ হয় এবং আমাদের মস্তিষ্কে দীর্ঘক্ষণ থেকে যায়। 

আরইএম পিরিয়ডে মস্তিষ্কের সামনের লজিক্যাল অংশটি কম সক্রিয় থাকে। তাই এটি মস্তিষ্কে ঘটে যাওয়া কোনো স্বাভাবিক কার্যকলাপ বা প্রক্রিয়াকে বাধা দেয় না। তাই ভোরবেলা দেখা স্বপ্ন নিয়ে আমরা গভীর চিন্তা করতে থাকি। পাশাপাশি ওই সময়ে দেখা স্বপ্ন আমরা চট করে ভুলি না। ক্রমাগত চিন্তা করলে বা ওই কাজ করতে চাইলে মনে হয় ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। কিন্তু আদতে ভোরের স্বপ্ন সত্যি এমন কোনো ব্যাখ্যা নেই।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor