দেশের অভিবাসন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সর্বশেষ চেষ্টা হলো নাগরিকত্ব বাতিলে নজর। ভিন্ন দেশ থেকে গিয়ে অ্যামেরিকার নাগরিক হওয়া সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব বাতিলের চেষ্টাকে আগ্রাসীভাবে অগ্রাধিকার দিচ্ছে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও-এনপিআর সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১১ জুন অনলাইনে লিখিত একটি বার্তা প্রকাশ করে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। সেই বার্তার বরাতে এনপিআর জানায়, অ্যামেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়া লোকজনের মধ্যে যারা নির্দিষ্ট কিছু অপরাধ করেছেন, তাদের নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে অ্যাটর্নিদের নির্দেশনা দিচ্ছেন জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া এ কৌশল কখন প্রয়োগ করা যাবে, সেই ক্ষেত্রে অ্যাটর্নিদের স্বাধীনতার ক্ষেত্র বাড়িয়ে দিচ্ছে ডিপার্টমেন্টটি। অ্যামেরিকায় জন্মগ্রহণ না করা নাগরিকদের লক্ষ্য করে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ডেটা অনুযায়ী, অ্যামেরিকার নাগরিক হয়েছেন প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ অভিবাসী।
নাগরিকত্ব বাতিলের সাম্প্রতিক ঘটনা
এনপিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে কমপক্ষে একজন ব্যক্তির। গত ১৩ জুন এক বিচারক এলিয়ট ডিউক নামের একজনের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ দেন। অ্যামেরিকার সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্য ডিউক যুক্তরাজ্য থেকে অ্যামেরিকায় গিয়েছিলেন। শিশুদের যৌন হেনস্তার সামগ্রী বিতরণের অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অভিযোগ স্বীকার করলেও ডিউক জানান, অ্যামেরিকার নাগরিক হওয়ার আগে অপরাধটি করেছিলেন।
পুরোনো কৌশল
অ্যামেরিকায় নাগরিকত্ব বাতিলের কৌশলটি নতুন নয়। চল্লিশের দশকের শেষে এবং পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে ম্যাককার্থি যুগে ব্যাপকভাবে এ কৌশল প্রয়োগ করা হয়। বারাক ওবামার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনে এ কৌশল প্রয়োগের সম্প্রসারণ হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সেটি আরও বেড়ে যায়। অ্যামেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়া লোকজনের মধ্যে যারা তাদের অপরাধে দোষী হওয়ার বিষয়ে মিথ্যাচার করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এ কৌশল প্রয়োগ করা হয়। এর বাইরে নাৎসি পার্টির মতো অবৈধ সংগঠনের সদস্য কিংবা ম্যাককার্থি যুগে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তার ভাষ্য
লিখিত বার্তাটিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রেট অ্যা. শুমেট জানান, সিভিল ডিভিশনে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বাস্তবায়নযোগ্য শীর্ষ পাঁচ অগ্রাধিকারের একটি হবে নাগরিকত্ব বাতিল। তিনি আরও জানান, আইনিভাবে অনুমোদিত এবং নথিপত্র দ্বারা সমর্থিত সব ধরনের ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত সিভিল ডিভিশনের। দেশের অভিবাসন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সর্বশেষ চেষ্টা হলো নাগরিকত্ব বাতিলে নজর।
Publisher & Editor