যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের টিকাবিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা প্যানেলের সব সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। গতকাল সোমবার তিনি এ ঘোষণা দেন। মার্কিন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, প্যানেলটির সদস্যদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে।
টিকাসংক্রান্ত ওই উপদেষ্টা কমিটির নাম অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস (এসিআইপি)। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক মতামত প্রতিবেদন এবং একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটির ১৭ জন বিশেষজ্ঞের সবাইকে বরখাস্ত করার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
টিকা নিয়ে সব সময় সন্দিহান রবার্ট এফ কেনেডি। তিনি দুই দশক ধরে টিকাবিরোধী ভুল তথ্য প্রচার করে আসছেন। তিনি কমিটির সদস্যদের বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে জনসাধারণের আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওই কমিটি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আপস করছে।
স্বাস্থ্য ও মানবসেবা দপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কেনেডি বলেন, ‘আজ আমরা টিকার পক্ষে-বিপক্ষের যেকোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডার ঊর্ধ্বে উঠে জন–আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
নিজের লেখা মতামত প্রতিবেদনে কেনেডি দাবি করেন, কমিটি স্থায়ী স্বার্থের দ্বন্দ্বে জর্জরিত। এটি নিতান্তই যেকোনো টিকাকে অনুমোদন দেওয়ার একটি সিলমারা সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
বহিষ্কৃত সদস্যদের সবাই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। কেনেডি আরও বলেন, বহিষ্কার হওয়া সদস্যদের জায়গায় নতুন সদস্যদের নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এসিআইপির সদস্যরা স্বীকৃত বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। তাঁদের সম্ভাব্য স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক।
শিশু চিকিৎসক ও ভাইরাস–বিশেষজ্ঞ পল অফিট কেনেডির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। পল অফিট নিজেও ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ওই টিকা প্যানেলের সদস্য ছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘তিনি (কেনেডি) মনে করেন, যাঁরা টিকা সম্পর্কে ইতিবাচকভাবে কথা বলেন বা টিকাবিষয়ক সুপারিশ করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই গভীরভাবে ওষুধশিল্পের পক্ষে চলে গেছেন।
অফিট বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘তিনি এমন একটি সমস্যার সমাধান করতে যাচ্ছেন, যার আদতে অস্তিত্বই নেই।’
২৫ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) আটলান্টা সদর দপ্তরে এসিআইপির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। এ বৈঠকে যেসব টিকা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, তার মধ্যে আছে অ্যানথ্রাক্স, কোভিড-১৯, হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, লাইম রোগ, রেসপিরেটরি সিনসিশাল ভাইরাস এবং আরও বেশ কিছু রোগের টিকা।
Publisher & Editor