কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) যে অসাধারণ আবৃত্তিশিল্পী ছিলেন, সে কথা আমরা প্রায় বিস্মৃত হয়েছি। অথবা তাঁর সুবিশাল সৃষ্টিবৈভবের মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ এই কুসুমিত নান্দনিক শিল্পটি চাপা পড়ে গিয়ে থাকবে হয়তো বা। ‘নজরুলের স্বকণ্ঠ আবৃত্তি’ প্রবন্ধে আমি বিষয়টি সর্বপ্রথম উন্মোচন করার চেষ্টা করেছি (দৈনিক ইত্তেফাক, ১১ ও ১৮ জানুয়ারি ১৯৯৬, ঢাকা)। কবি নিজে তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতা যে কত সভায় কত মঞ্চে কত আড্ডায় আবৃত্তি করে মানুষকে উন্মাতাল করে দিতেন, তার কোনো সীমা নেই।
রেডিওতে আবৃত্তি করতেন নিজের লেখা বহু কবিতা। আর নজরুলের নিজের কণ্ঠে ‘নারী’ ও ‘রবি-হারা’ কবিতা আবৃত্তির গ্রামোফোন রেকর্ড তো বেরিয়েই ছিল ১৯২৮ ও ১৯৪১ সালে। নজরুল-কবিতার আবৃত্তি চর্চার এই প্রবহমান ধারা নজরুলের স্তব্ধতার পর ক্রমান্বয়ে বেড়ে যেতে থাকে। আর এখন নজরুল আবৃত্তির পৃথক ও স্বতন্ত্র ধারা সময়ের দাবি।
নজরুল-কবিতার আবৃত্তিধারা নজরুলের স্বকালে প্রবলভাবে লোকপ্রিয় ছিল। নজরুল-উত্তরকালে নতুন উদ্ভাস নতুন মাত্রিকতা নতুন সমাজ নতুন রাজনীতি ও নতুন দেশকালের উপযোগিতায় তা অভ্রচুম্বী স্থান লাভ করেছে।
নজরুল-কবিতা এখন সব দেশের সব কালের সব মানুষের মানবাধিকারমন্ত্রের সমার্থক। যত পদানত অবমানিত বঞ্চিত লাঞ্ছিত ভাগ্যহত ‘নিপীড়িত জন-মন-মথিত বাণী’।
সর্বহারা মানুষ সর্বজয়ী হওয়ার দুর্বার বাসনায় নজরুল-কবিতার আবৃত্তি শুনে নিজেকে তৈরি করে নিচ্ছে বিশ্বব্যাপী। বর্তমান সময়ে কাজী নজরুল ইসলাম খুবই প্রাসঙ্গিক। ক্রমান্বয়ে এই প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান কালের পুঁজিবাদী ভোগবাদী সমাজব্যবস্থায় মানুষের নিপীড়িত হওয়া এবং অধিকার হরণের যুগে নজরুলের ধর্মীয় সম্প্রীতির চেতনা, সাম্যবাদী চিন্তাধারা, আবৃত্তিচিন্তা মানবতার উত্তুঙ্গ জয় ঘোষণা, যৌবনের তেজোদীপ্ত আহ্বান নজরুলকে অত্যাবশ্যক করে তুলেছে। শিল্পের দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রিকতায় নজরুল-আবৃত্তির উত্তরাধিকার এ জন্য জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে।
নজরুল-কবিতা আবৃত্তির প্রাসঙ্গিক বিস্তার দিগন্তব্যাপী। আমি বিশ্বাস করি, মুদ্রিত বাণীবদ্ধের চেয়েও আবৃত্তি বেশি জীবন্ত, তেজোদীপ্ত, ঘনীভূত আবেগের ঝংকারময় প্রকাশ—যা সরাসরি শ্রোতার চেতনা ও বোধের মর্মমূলে ইচ্ছাশক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে দেয়। নজরুল-কবিতার পরম বিকাশ ঘটে মানবকণ্ঠের উচ্চারণশৈলীতে, আবৃত্তি শিল্পকর্মে। নজরুল-কবিতার আবৃত্তি সব সময়ই আমাদের সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রিক জীবনে একটি জরুরি বিষয় বলে বিবেচিত হয়েছে। কারণ নজরুল-কবিতা প্রগতির কথা বলে, সমতার কথা বলে, শাশ্বত সত্যের কথা বলে, মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথা উচ্চারণ করে। আর এ সবই আমাদের অভীষ্ট ও পরম আরাধ্য, পৃথিবীর সব মানুষেরই একই যাচ্ঞা। বর্তমান বিশ্বে মানবাধিকার অভিধাটি জনপ্রিয় সর্বজনীন বিবেচনা। অথচ নজরুল-কবিতায় বিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই এ প্রসঙ্গটি উচ্চকিত হয়েছে। তিনি বিশ্বকে, অধিকারবঞ্চিত মানুষকে মানবাধিকারের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। জাতিসংঘ সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা করে ১৯৪৮ সালে, তার পর থেকে ক্রমে ক্রমে মানবাধিকারের বিষয়গুলো বিভিন্ন দেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে। মানবাধিকারের লিটারেচারের জন্য নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করা ছাড়া উপায় নেই। তাঁর রচনায় বঞ্চিত মানুষের যে অফুরান মর্মবেদনা ধ্বনিত হয়েছে, এর প্রতিকার করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। বর্তমানের বিপর্যস্ততার ওপরে ভবিষ্যতের প্রদীপ্ত জাগরণের জন্য নজরুলের মানবতাবাদী কবিতার আবৃত্তি কণ্ঠে ধারণ করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-নির্বিশেষে এক নাগরিক সত্তা বিনির্মাণে নজরুল এখনো অনন্য সারথি। নজরুল-কবিতার আবৃত্তি আমাদের জাতীয় সংকটে বারবার অনিবার্য হয়েছে প্রায় শত বছর ধরে। এই একটিমাত্র দ্রোহী চেতনার কাছে আমরা বারবার সমর্পিত হয়েছি। ‘আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্নিশ’ মন্ত্রে বাংলাদেশের মানুষ অকুতোভয় হয়েছে নানা সংগ্রামে, বিপ্লবে।
নজরুলের কবিতা সু-আবৃত্তিযোগ্য। তার অন্তর্নিহিত কারণ নজরুল আবৃত্তি করেই লিখতেন, অন্তত আমার তা-ই মনে হয়। যেহেতু নজরুল নিজের লেখা কবিতা আবৃত্তি করতেন বিভিন্ন স্থানে। কবি যখন আবৃত্তিশিল্পী হন, তখন তিনি আবৃত্তি করে করে কবিতা লিখবেন, এটাই স্বাভাবিক। আবৃত্তি করার জন্য যখন আমরা একটি কবিতা বেছে নিই, তখন তার মধ্যে নানা গুণের প্রাধান্য অনুসন্ধান করি; যেমন—কবিতাটির ছন্দ, সুর তাল লয়, ধ্বনি দ্যোতনা, ধ্বনি সৌন্দর্য, নজরুল-কবিতার আবৃত্তি শব্দের শক্তি, সর্বজনীন বাণী, স্বাতন্ত্র্য, গভীর কোনো ইঙ্গিত ইত্যাদি। নজরুল-কবিতা এসব প্রাচুর্যময় ঐশ্বর্যে ঋদ্ধ। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি, শিশুতোষ, হাস্য-কৌতুক বিষয়ে তাঁর ছিল সহজ বিচরণ। অনায়াসে এসব উপজীব্যকে তিনি সাহিত্যের বিষয়ে পরিণত করতেন। ফলে আবৃত্তির জন্য বিচিত্র রস আর অফুরান বিষয়বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ কবিতা আবৃত্তিশিল্পীরা নজরুল থেকে পেয়ে থাকেন। পাঠক-শ্রোতার নান্দনিক পিপাসার যেকোনো আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য নজরুল যথেষ্ট। আধুনিক যুগে কবিতা শ্রবণের বিষয়; যেমন—নাটক ও সংগীত। আজকাল নাটক আমরা কেউ পাঠ করি না, গানের বাণী আমরা কেউ আউড়ে যাই না। নাটকের অভিনয় মঞ্চে, টেলিভিশনে দেখার প্রত্যাশী। গানের বাণী নয়; সুর-তাল-গায়কিসহযোগে শিল্পীর কণ্ঠে শুনতেই আমরা অভ্যস্ত। কবিতারও তেমনই একটি শ্রবণ-সুখকর আকুতি আছে, ধ্বনিময় বিস্তারে তা জাগ্রত হয়। এই শ্রবণ-মাধুর্য দিয়ে আমরা আমাদের কাব্যতৃষ্ণা মিটিয়ে থাকি। আধুনিক যুগে কবিতা শ্রব্যকাব্যে পর্যবসিত হয়েছে।
লক্ষ করা যায় যে আমাদের দেশে বা পৃথিবীর যেকোনো দেশের বেশির ভাগ মানুষের ভাষায় সাহিত্য রচনা করা হয় না; সাহিত্য বরাবরই একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে সৃজন করা হয়। বাংলা সাহিত্যে এর ব্যতিক্রম নজরুল ও জসীমউদ্দীন, যেখানে আমরা সমগ্র বাংলাদেশকে দেখতে পাই, আমাদের জাতিরাষ্ট্রের আবেগ-অনুভূতি, সংস্কৃতি, লোকাচার, আকাঙ্ক্ষার সামগ্রিক বিচ্ছুরণ বিধৃত হয়। এর কারণ হলো, ‘মানুষের সন্নিহিত হওয়ার একমাত্র উপায় তার বাণীভঙ্গিকে আয়ত্তে আনা। আমাদের বেশির ভাগ মানুষের ভাষায় আমরা কবিতা লিখি না...আমরা সবাই একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতির কবি। সর্বান্তঃকরণের উদ্ঘাটন খুব কম দেখা যায়।’ বলেছিলেন প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান। নজরুলই প্রথম বিষয়ী করে তুললেন সাধারণ-অতিসাধারণকে তাঁর সাহিত্যে। দেশের মানুষের আত্মার রণন ধ্বনিত হলো তাঁর কবিতায় তাদের বাণীভঙ্গিতে। সর্বান্তঃকরণের প্রবল প্রকাশ ঘটল তাঁর সাহিত্যে। মানুষ নজরুল-সমগ্র সআগ্রহে গ্রহণ করে নিল, উল্লসিত হলো তাদের প্রাণের ঘ্রাণের সন্ধান পেয়ে। যে বাণীর জন্য সহস্র বছর বাঙালি অপেক্ষমাণ ছিল অধীর আগ্রহে, সেই বাণী তারা কান পেতে শুনল এবং আজও তা শুনছে; শুনবে বহুকাল পৃথিবী। আর এই শোনানোর গুরুভার পৌঁছে দেবে আবৃত্তিশিল্পীরা। পড়াশোনা জানুক না জানুক নির্বিশেষে নির্বিচারে সবাইকে শোনাবে তারা, নজরুল, শুধু নজরুল এবং নজরুলকে। শ্রুতির মধ্য দিয়ে নিরক্ষর মানুষ সহজেই নজরুল সাহিত্যকে ধারণ করতে পারবে। রসাস্বাদন করতে পারবে নজরুল দর্শন। একমাত্র আবৃত্তিশিল্পীরাই পারে নজরুলকে ব্যাপক আকারে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার একক দায়িত্ব গ্রহণ করতে। নজরুল ছাড়া মানুষের অধিকার জাগরণকারী কেউ নেই। নজরুল আমাদের প্রাণের খোরাক, পেটের খোরাক, সম্ভ্রম ফিরে পাওয়ার শাণিত হাতিয়ার। আবৃত্তিশিল্পীরা নজরুলকে যত বেশি আবৃত্তি করবে, জাতি তত বেশি জাগ্রত হবে, শির উন্নত হবে এবং তা পুনর্জাগরণের চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলবে। আর তাই নজরুল আমাদের শরণ ও অভীষ্ট। বাংলাদেশের জাতিসত্তা যতগুলো চেতনা ধারণ করে এবং আকাঙ্ক্ষা করে তা সামগ্রিকভাবে নজরুল ভাণ্ডারে দেদীপ্যমান। ইংরেজ বিতাড়ন এবং ভারত স্বাধীনতার ভিত্তিভূমে নজরুল সাহিত্য যেমন ক্রিয়াশীল ছিল, তেমনিভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার উেস নজরুল সাহিত্য দুর্দমনীয় প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
আমাদের দেশের আবৃত্তিশিল্পীরা নজরুলের দ্রোহের কবিতাকেই বেশি বেছে নেয় তাদের কণ্ঠে। নজরুলের দ্রোহের কবিতাগুলোর মধ্যেও কয়েকটি মাত্রই আমরা ঘুরেফিরে আবৃত্তি করা পছন্দ করি।
এটি খণ্ডিত নজরুল চর্চার নামান্তর। কবিতা অনেক রকম হয় এবং নজরুল অনেক রকমের কবিতা সৃজনে সহজগামী ছিলেন। আমাদের কণ্ঠেও নজরুলের অনেক রকমের কবিতা উচ্চারিত হওয়া আবশ্যক। আমাদের সচেতন হওয়া উচিত, যেন আমরা নজরুলকে শুধু বিদ্রোহ-বিপ্লবে একপেশে করে না রাখি। নজরুলের চেতনাপ্রধান কবিতাগুলোর পাশাপাশি বাসনাপ্রধান কবিতাগুলোর উন্মোচনের সময় এসেছে। স্বদেশপ্রেম চেতনায়, প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনায়, মানবতার উদ্বোধনে, চিরকালীন প্রেম-বিরহের ঐশ্বর্যরসে, শিশু-কিশোর মনোজগতের জাদুকরী আহ্বানে, শৈল্পিক নানা কুশলতায় সমৃদ্ধ বহু কবিতা এখনো পাঠক-শ্রোতার অনুভবের আড়ালে রয়ে গেছে। আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে আমার দাবি, নজরুলকে নতুন করে আবিষ্কারের প্রয়োজনে শৈল্পিক দ্যোতনায় সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ নজরুলকে শ্রোতার কাছে তুলে ধরা এখন খুবই জরুরি। শুধু বিদ্রোহ বা প্রেম নয়—সকল মাত্রিকতার কবিতায়, গদ্যে, নাটকে, শিশুসাহিত্যে নজরুলের পদচারণ স্বচ্ছন্দময় ছিল। আমরা নজরুলের ‘সঞ্চিতা’র বাইরে যেতে অনাগ্রহী। আর শিশুদের কাছে ‘লিচু চোর’, ‘খাঁদুদাদু’, ‘খুকি ও কাঠবেরালি’, ‘সংকল্প’—এ রকম কয়েকটি কবিতাকে প্রধান করে তুলেছি। কিন্তু তা অনুচিত। নজরুলের সহজলভ্য রচনাবলিতে শিশুসাহিত্যের উজ্জ্বল বর্ণিল ভুবন রয়েছে শিশুমনোজগৎ বিনির্মাণের অপেক্ষায়। তাঁর সাহিত্য পরিভ্রমণে শিশুরা কর্তব্যবোধে জাগ্রত হতে পারবে। বড় হয়ে তারা আদর্শচ্যুত হবে না, দেশের হবে, দশের হবে। বিচ্ছিন্ন মানুষ না হয়ে শিশুরা গ্রন্থিত মানুষরূপে দেশের ভালো করায় ব্রতী হবে।
নজরুল অন্য কবিদের চেয়ে ভিন্ন স্বরের ভিন্ন বোধের স্বতন্ত্র এক সার্বভৌম কবি। প্রফেসর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নজরুল ছিলেন পরাধীন দেশের স্বাধীন নজরুল-কবিতার আবৃত্তি কবি।’ নজরুলের কবিতা আবৃত্তি তাই প্রচলিত আবৃত্তিধারায় করা যাবে না। আমরা লক্ষ করব যে বাংলা সাহিত্যে অনেক প্রধান কবি আছেন, যাঁদের একেকটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের ছাঁচে ফেলা যায়। ফলে তাঁদের কবিতার আবৃত্তিরীতিও মোটামুটি একটি সুরে বাঁধা। এর হেরফের খুব একটা ঘটে না। কিন্তু নজরুল-কবিতার আবৃত্তি বিচিত্রগামী। নজরুল আবৃত্তির মাধ্যমে আমরা সমাজ ও স্বদেশচেতনা জনসাধারণ্যে অঙ্কুরিত করতে পারি। ছড়াতে পারি নিজ মননে সবখানে তীব্র আশার নেশা। এর মধ্য দিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ, সাম্যবাদী চিন্তা ও মানবতাবাদ স্ফুরিত হতে পারে।
আপন সমাজ ও দেশ প্রসঙ্গে তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠ, আপসহীন। তাঁর সমান প্রাসঙ্গিকতা অর্জন করা শুধু দুরূহই নয়, উপলব্ধিও শ্রমসাধ্য। আবৃত্তির মাধ্যমে নজরুল-স্বাতন্ত্র্যের স্বরূপ উন্মোচন করা যায়। আর তা আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনেই করতে হবে। কারণ নজরুল সাহিত্য সমাজ ও স্বদেশের জন্য সৃজিত।
নজরুল সাহিত্যের ভাবদর্শন বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের রূপক ভাষ্য; সে কারণেই তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি। জাতীয় জীবনের মূল গতিধারার সাহিত্যিক প্রকাশ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্যই আমাদের নজরুল আবৃত্তি, পাঠ ও আগ্রহ প্রয়োজন। আবৃত্তিশিল্পীদের সমগ্র নজরুল পাঠ করে, বিভিন্ন মাত্রিকতা উন্মোচন করে নজরুলকে জনসমক্ষে উপস্থিত করার প্রেরণায় উদ্ভাসিত হতে হবে। কেননা নজরুল আমাদের জাতীয় কবি, তাঁর প্রতি রয়েছে আমাদের দায়বদ্ধতা।
Publisher & Editor