শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

কাঁধের জোড়ায় জখম

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৩

কাঁধ শরীরের তিনটি হাড়, চারটি জোড়া এবং ত্রিশটি পেশির সমন্বয়ে তৈরি। শরীরের জোড়াগুলোর মধ্যে কাঁধের জোড়া সবচেয়ে বেশি নড়াচড়া করে। দৈনন্দিন জীবনে কাঁধ বিভিন্ন কারণে আঘাত ছাড়াও কিছু রোগের কারণেও জখম বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। ভারোত্তোলন, খেলাধুলা, মারামারি ইত্যাদি কারণে কাঁধের ইনজুরি হতে পারে। আবার পেশাগত কারণ যেমন- পেইনটিং, গ্লাস পরিষ্কার করা, ওজন তোলা, বোর্ডে লেখা, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করা ইত্যাদি কাঁধের দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরি করে থাকে। এ ছাড়া বয়স্কদের ব্যবহারজনিত ক্ষয়, জোড়ায় অতিরিক্ত হাড় (আর্থ্রাইটিস)।
প্রাথমিক করণীয়:
১. হঠাৎ জখম হলে জোড়াকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে, তাতে টিস্যুতে ইনজুরি ও ব্যথা কম হবে।
২. বরফের টুকরা বা ঠাণ্ডা পানি কাপড়ে বা প্লাস্টিকের ব্যাগে নিয়ে লাগাতে হবে। ব্যথা ও ফোলা কমে আসবে। (প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট বা দুই ঘণ্টা পর পর ২০ মিনিট অনবরত লাগাতে হবে। তবে এটা সহনীয়ের মধ্যে রাখতে হবে। এই পদ্ধতি আঘাতের ৪৮-৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে)।
৩. জোড়ায় ইলাসটো কমপ্রেসন বা স্পিলিন্ট ব্যবহারে ফোলা ও ব্যথা কমে আসে।
৪. জোড়ায় আর্ম সিলিং বা স্পিলিন্ট দিয়ে উঁচু করে রাখলে ফোলা কম হবে।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন।
৬. ব্যথা ও ফোলা সেরে উঠালে জোড়া নমনীয় ও পেশি শক্তিশালী করার ব্যয়াম করতে হবে।
৭. জোড়া স্থানচ্যুতি হলে শিগগিরই হাসপাতালে নিতে হবে।
চিকিৎসা: অল্প আঘাতপ্রাপ্ত রোগীরা প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যান। তবে দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরির ক্ষেত্রে রোগের ইতিহাস শুনে এবং জোড়ার বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে কি কি ইনজুরি হয়েছে এবং এর তীব্রতা নির্ণয় করতে হবে। কখনো কখনো এক্স-রে ও এমআরআই’র সাহায্য নিতে হবে। প্রয়োজন হলে লিগামেন্ট, জোড়ার আবরণ ও পেশি ইনজুরি, জোড়ার ডিসপ্লেসমেন্ট, আর্থ্রাইটিস ও জোড়ায় অতিরিক্ত হাড় চিকিৎসা প্রদান করতে সক্ষম বা অভিজ্ঞ আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসক দেখাতে হবে। আর্থ্রোস্কোপ ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে কাঁধে প্রবেশ করিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
* লিগামেন্ট ও জোড়ার আবরণ এনকোর সুসার দ্বারা সেলাই করে হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে জোড়া ছুটে যাওয়া রোধ করা হয়।
* পেশি ইনজুরির আকৃতি, ছোট বা বড় এবং অবস্থান নির্ণয় করা হয় এবং এনকোর সুসার দ্বারা সেলাই করে হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হয়।
* আর্থ্রাইটিসের কারণে অতিরিক্ত হাড় সেভিং বা বের করা হয়।
* বার্সাইটিস ও আর্থ্রাইটিস হয়ে জয়েন্ট স্পেস কমে গেলে বিসঙ্কোচন করা হয়।
* কখনো কখনো বড় ধরনের পেশি ইনজুরির ক্ষেত্রে পেশি ট্রান্সফার করা হয়।
হাড় ও তরুণাস্থি ক্ষয় এবং অসটিওআর্থ্রাইটিস হয়ে জয়েন্ট নষ্ট হলে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করতে হবে। প্রাথমিক বা শল্য চিকিৎসার পর নিয়মিত ও উপযুক্ত পরিচর্যা করে জোড়ার স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor