নিউইয়র্কে সংবর্ধিত হলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী। প্রবাসে থেকেও জন্মভূমির উন্নয়নে মোশাররফ স্থাপন করেছেন অনন্য দৃষ্টান্ত। নিউইয়র্কে ট্যাক্সি চালিয়ে মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী দেশে গড়েছেন ৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের যাবতীয় সঞ্চয় দিয়ে তিনি আলোকিত করে যাচ্ছেন প্রজন্মকে। নিজ এলাকা কুমিল্লায় শিক্ষার আলো ছড়িতে দিতে একে একে গড়ে তুলেছেন আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠা করেছেন হাসপাতালও। নিউইয়র্কপ্রবাসী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোশারফ হোসেন খান চৌধুরীকে সম্মান জানাতে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। প্রবাসী বাংলাদেশি ফোরাম ইউএসএ ইনক-এর উদ্যোগে ১৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশস সেন্টারে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা মোশারফ হোসেন খান চৌধুরীর অবদানকে বিশেষভাবে স্মরণ করে তার কর্মকাণ্ডকে প্রবাসী সমাজে অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মূলধারার রাজনীতিবিদ এবং প্রবাসী বাংলাদেশী ফোরাম ইউএসএ’র আহ্বায়ক ফখরুল আলম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক প্রবাসী প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা হাসান ফেরদৌস, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট কাজী নয়ন, আমির হোসেন, আব্দুস সবুর ও বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুরশিদ চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ চৌধুরী, রানু ফেরদৌস, ফোরামের উপদেষ্টা শাজাহান শেখ, কলামিস্ট সুব্রত বিশ্বাস, জয়নাল আবেদীন, জিকরুল আমিন জুয়েল, বিলাল চৌধুরী, বাপস্ নিউজ এডিটর ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ ইউনুছ সরকার, সাধারণ সম্পাদক এ সিদ্দিক পাটোয়ারী, মিয়া মোহাম্মদ দুলাল, সামছুদ্দীন আহমেদ শামিম, গাজী গোলাম আজম বাদল, দানবির ইসলাম সরকার, নাদির সরকার, আব্দুস সবুর, ব্রাহ্মনপাড়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমির হোসেন, শাহআলম হেডমাস্টার, আবুল হাসেম, সাবেক চেয়ারম্যান ও তাজুল ইসলাম, হালিম মুন্সী, আব্দুল লতিফ, হাবিব খান চৌধুরী, উপাকুন্ড, ফারহানা রুমা, এমরান সরকার, কেনু খান, সামান্তা সবুর, বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের, ইন্ডিপেন্ডেন্স টেলিভিশনের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি মো. সুলাইমান, প্রবাস পত্রিকার সম্পাদক আবু সাঈদ, সিরাজুল ইসলাম, দেশ পত্রিকার সম্পাদক মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম ফিরোজ, শামসুন্নাহার মনু, ফেরদৌস খান চৌধুরী, মোহাম্মদ বায়েজিদ ভূঁইয়া ,তরুন প্রজন্মের প্রতিনিধি নিয়ামুল হাসান সহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আহসান হাবিব ও শামসুদ্দিন আহাম্মেদ শামীম অনুষ্ঠানের মুখগ্রন্থ পাঠ করেন তিতুমীর কলেজের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা মাহজাবিন। অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী বলেন, আমার বাবা শিক্ষক ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল নিজের এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করবেন। ছোটবেলায় বাবা মারা যান। নানা জটিলতায় আমি বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারিনি। তাই আমি চেয়েছি আমার এলাকার ছেলেমেয়েরা যেন সঠিক শিক্ষা পায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতি ফখরুল আলম বলেন, একটা মোমবাতি থেকে হাজার মোমবাতি জ্বলানো যায়, কিন্তু তাতে তার আলো কমে না। মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী আমাদের সমাজের তেমনই আলোর প্রতীক, যাকে অনুসরণ করে আমরা সমাজের উন্নয়ন করতে পারি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সমাজসেবায় নিউইয়র্ক প্রবাসী মোশারফ হোসেন খান চৌধুরীর অবদান অতুলনীয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী সমাজে শিক্ষার প্রসার, দারিদ্র্য বিমোচন, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণ এবং সমাজসেবা কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রবাসী সমাজে তার এই অবদান অনেক প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা ও সমাজসেবা প্রকল্পে অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানসহ অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রবাসী ও স্থানীয় সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেগুলোর জন্য তিনি প্রায় পাঁচ একর জমি দান করেছেন, যা তার দেশ প্রেম ও সমাজসেবার প্রতীক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে – ধাণ্যদৌল আব্দুর রাজ্জাক খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আব্দুল মতিন খসরু মহিলা কলেজ, আশেদা জোবেদা ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, মুমু রোহান চাইল্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল। তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে। প্রবাস জীবনের সংগ্রাম ও সাফল্য মোশারফ হোসেনের জীবন সংগ্রামের গল্প অনুপ্রেরণাদায়ক। প্রবাসী বাংলাদেশি ফোরাম ইউএসও-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের উদ্যোগ প্রবাসী সমাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা, শিক্ষা ও সমাজসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধান অতিথি মাহমুদুল্লাহ বলেন, মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী আমাদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার পথ অনুসরণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কমিউনিটির সবাইকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস বলেন, মোশারফ হোসেন খান চৌধুরী হচ্ছেন সেই প্রদীপ, যিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সমাজের সেবায়।
Publisher & Editor