ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষা নিয়ে নানা পদক্ষেপ নেন, যার অন্যতম ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তহবিল কমানো। তহবিল কমানো নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি তর্ক-বিতর্ক হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের গবেষণা তহবিলে বরাদ্দ কমানোর পদক্ষেপের মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
২০২৫ অর্থবছরে (৩০ জুন পর্যন্ত) বিশ্ববিদ্যালয়টির তহবিল প্রায় ৪০০ কোটি ডলার বেড়ে ৫৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিয়োগ শাখা হার্ভার্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (এইচএমসি) বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) জানিয়েছে, ২০২৫ অর্থবছরে তারা ১১ দশমিক ৯ শতাংশ বিনিয়োগ রিটার্ন অর্জন করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদি ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে।
এর আগে ২০২৪ অর্থবছরে হার্ভার্ডের তহবিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ রিটার্ন পেয়ে মোট ৫৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান পেয়েছে, যা অনুদান হিসেবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ট্রাম্প প্রশাসনের বরাদ্দ কমানোর সিদ্ধান্তের পরই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুদান বেড়েছে।
হার্ভার্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী এন পি নারভেকার জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের ৪১ শতাংশ প্রাইভেট ইকুইটিতে, ৩১ শতাংশ হেজ ফান্ডে এবং ১৪ শতাংশ পাবলিক ইকুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা আগের বছরের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে।
হার্ভার্ডের মতো আইভি লিগ স্কুলগুলো হেজ ফান্ড এবং প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড ব্যবহারের পথিকৃৎ ছিল, তবে বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার কারণে এই আয়ের উৎসগুলো আরও বেশি তদন্তের আওতায় রয়েছে।
হার্ভার্ডের সভাপতি অ্যালান গার্বার ট্রাম্পের নাম না করেই এক বার্তায় লিখেছেন, 'আমরা অনিশ্চয়তা ও রাজস্বের উৎসের হুমকির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে চলছি।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগ, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও যুদ্ধের সময় হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিরোধিতাকে (অ্যান্টিসেমিটিজম) উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে সমালোচকেরা মনে করেন, এটি আসলে ট্রাম্পের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় তথাকথিত বামপন্থী পক্ষপাতিত্ব দমন করার একটি অজুহাতমাত্র।
এরপরই তহবিল বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এই বিষয়টি এখন আদালতে গড়িয়েছে। ফেডারেল সরকারের গবেষণা তহবিল হ্রাস এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সীমিত করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতে লড়ছে।
সূত্র: রয়টার্স
Publisher & Editor