ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। বর্তমান সময়ে মানুষের গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। শরীরে ইনসুলিনের উৎপাদন কমে গেলে অথবা ইনসুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস পেলে কোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে না। এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়তে থাকে। এ অবস্থাই হচ্ছে ডায়াবেটিস।
কাদের ডায়াবেটিস বেশি হয়
যাঁদের বংশে ডায়াবেটিস আছে।
যাঁদের ওজন বেশি।
যারা ব্যায়াম অথবা শারীরিক পরিশ্রম করেন না।
যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন করছেন।
যাঁদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে।
যেসব নারীর পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম আছে।
লক্ষণ কী
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
খুব বেশি পিপাসা বা গলা শুকিয়ে আসা।
বেশি ক্ষুধা পাওয়া, ওজন কমে যাওয়া।
অত্যধিক ক্লান্তি বোধ করা।
চোখে কম দেখা।
ক্ষত শুকাতে বিলম্ব হওয়া।
বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন খোসপাঁচড়া, ফোড়া ইত্যাদি বেশি হওয়া।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যা প্রয়োজন
রোগী ও পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্খলাবোধ।
প্রয়োজনে মুখে খাবার ওষুধ অথবা ইনসুলিন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে
হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, পক্ষাঘাত, স্নায়ুর সমস্যা, কিডনি বিকল, চোখের সমস্যা যেমন চোখের মধ্যে রক্তক্ষরণ এবং অন্ধত্ব, পায়ে পচনশীল ক্ষত, পাতলা পায়খানা, মাড়ির প্রদাহ, খোসপাঁচড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে পুরুষের যৌন ক্ষমতা হ্রাস, নারীদের বেশি ওজনের শিশু জন্মদান, মৃত শিশু প্রসব, জন্মের পরই শিশুর মৃত্যু এবং নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে এই সব মারাত্মক জটিলতা থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকা যায়।
ডায়াবেটিসের জরুরি অবস্থা বিশেষ করে রক্তের সুগার কমে যাওয়া বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। এর লক্ষণগুলো ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সম্পর্কে অবশ্যই জ্ঞান থাকতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বাসায় গ্লুকোমিটার দিয়ে নিজের রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপ করা এবং রক্তের সুগার দেখে চিকিৎসা তদারক করা। এ ছাড়া তিন থেকে ছয় মাস অন্তর রক্তের গড় সুগার বা এইচবিএওয়ানসি এবং অন্যান্য জটিলতা পরীক্ষা করে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
Publisher & Editor