রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জের ঘটনায় আরও এক মামলা

প্রকাশিত: ০৩:০২, ২৭ জুলাই ২০২৫ |

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে।  এ নিয়ে সদর থানায় পাঁচটি হত্যা মামলাসহ মোট ১২টি মামলা হলো।

শনিবার (২৬ জুলাই) সংঘর্ষে নিহত রমজান মুন্সীর ভাই জামাল মুন্সী বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৩৪ ও ৩০২ ধারা উল্লেখ করে সদর থানায় হত্যা মামলাটি করেন। তবে, মামলায় এজাহারনামীয় কোনো আসামি করা হয় হয়নি। এমনকি, অজ্ঞাত আসামির সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়নি।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন

মামলার এজাহারে দাবি করেন, গত ১৬ জুলাই এনসিপির জুলাই পদযাত্রা সমাবেশকে ঘিরে গোপালগঞ্জ শহরে যানজট ছিল। তাই ওই দিন বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে রমজান মুন্সী (৩২) ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজে রেখে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বাসার উদ্দেশ্য রওনা দেন। তিনি শহরের লঞ্চঘাটের সামনে পৌঁছালে দেখেন, অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজার লোক লাঠিসোটা, ঢাল-সড়কি, রামদা, ট্যাটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল দিতে দিতে এনসিপির পৌরপার্কের সমাবেশ স্থলের দিকে যেতে থাকে।

এ সময় ওই এলাকায় কর্তব্যরত যৌথ বাহিনীর উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতনামারা। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। হামলাকারীদের ধাওয়া খেয়ে রমজান লঞ্চঘাটের ফলপট্টিতে অবস্থান নেন। এ সময় হামলাকারীদের মধ্যে ওৎ পেতে থাকা অজ্ঞাত দুস্কৃতকারীরা যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। যৌথবাহিনীর সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।

এ সময় রমজান নিরাপদে চৌরঙ্গী সিনেমা হলের গলির মধ্যে অবস্থান করে। বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে সিনেমা হলের সামনে দাঁড়ানো আবস্থায় রমজানের বুকের ডান পাজরের উপর গুলি লাগে। সেখানেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রমজান গত ১৭ জুলাই রাতে মারা যান। পরের দিন সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে রমজানের মরদেহ গোপালগঞ্জে আনা হয়। রাতে জানাযা শেষে শহরের গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

গত ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রোববার (২০ জুলাই) রাত আটটা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor