বর্তমানে বায়ু দূষণের প্রভাবে শ্বাসতন্ত্রের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। ফুসফুসকে সুস্থ রাখার জন্য শুধু বিশুদ্ধ বাতাস বা ব্যায়ামই যথেষ্ট নয়, দরকার সঠিক পুষ্টিরও। অনেকেই জানেন না, একটি বিশেষ ভিটামিনের অভাবে ফুসফুস দুর্বল হয়ে পড়তে পারে এবং মারাত্মক শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ফুসফুসের জন্য কোন ভিটামিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও মার্কিন ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’-এর তথ্য অনুযায়ী, ভিটামিন ডি-এর অভাব ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ভিটামিন ডি কেন প্রয়োজন?
ভিটামিন ডি শুধু হাড়ের জন্য নয়, ফুসফুসের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি ফুসফুসে প্রদাহ কমাতে এবং কোষের ক্ষতি মেরামত করতে সাহায্য করে। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। হাঁপানি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ ও অন্যান্য শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমায়।
ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণের ক্ষমতা বাড়ায়।
শুধু ভিটামিন ডি নয়, আরো যেসব ভিটামিন দরকার ফুসফুসের জন্য:
ভিটামিন সি: একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দূষণের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে।
ভিটামিন ই : সেল মেমব্রেন রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি কোথা থেকে পাবেন?
সূর্যের আলো : প্রতিদিন সকালে ২০-৩০ মিনিট রোদে থাকলে শরীর নিজে থেকেই ভিটামিন ডি তৈরি করে।
খাবার : তৈলাক্ত মাছ (যেমন স্যামন), ডিমের কুসুম, মাশরুম, ফোর্টিফায়েড দুধ ও দই
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন কে, ডি এর সঙ্গে খাওয়া প্রয়োজন কেন?
ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ায়। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম রক্তে জমে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞ ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ভিটামিন কে খাওয়ার পরামর্শ দেন, যা হাড়ে ক্যালসিয়াম সঞ্চয়ে সহায়তা করে এবং রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমতে দেয় না।
বিখ্যাত গবেষক জোয়ান ম্যানসনের মতে, ভিটামিন ডি কোনো অলৌকিক ওষুধ নয়।
এটি শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক হলেও সব ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আজকের দূষণপূর্ণ পরিবেশে ফুসফুসের যত্ন নিতে হলে পরিষ্কার বাতাস ও ব্যায়ামের পাশাপাশি সঠিক পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। ভিটামিন ডি, সি এবং ই—এই তিনটি ভিটামিন যেন খাদ্যতালিকায় থাকে তা নিশ্চিত করুন। প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসই আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ ও ফুসফুসকে রাখতে পারে কার্যকর।
Publisher & Editor