সামনাসামনি খুবই ভালো মানুষ। বিনয়ী, হেসে কথা বলেন। অথচ সুযোগ পেলে ক্ষতি করতে ছাড়েন না। এমন কেউ যদি আপনার সহকর্মী হন, নানাভাবেই মুশকিলে পড়তে পারেন আপনি। আপনার অনুপস্থিতিতে আপনাকে নিয়ে মুখরোচক গল্প ছড়াতে পারেন তিনি। আপনার গুছিয়ে আনা কাজ নষ্টও করে দিতে পারেন। কৌশলে ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সামনে আপনাকে অপদস্থ করতে পারেন। দ্বিমুখী চরিত্রের এ মানুষদের কীভাবে সামলাবেন?
একজন সহকর্মীকে চাইলেও আপনিসব সময় এড়িয়ে চলতে পারবেন না। কাউকে এড়ানোর জন্য চাকরি ছেড়ে দেওয়াও যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত নয়। অন্য কোথাও চাকরি করতে গেলেও যে একই ধরনের সমস্যায় পড়বেন না, তারও নিশ্চয়তা নেই। বরং একটু সতর্কভাবে সামলে নিন নিজেকে ও সেই সহকর্মীকে।
১. সীমানা নির্ধারণ করুন
যিনি দ্বিমুখী আচরণ করেন, তাঁর জন্য কিছু সীমানা নির্ধারণ করে নিন আপনিই। তাঁর উপস্থিতিতে ব্যক্তিগত কথা না বলার চেষ্টা করুন। কাজের ক্ষেত্রে আপনার কোথায় সুবিধা হচ্ছে, কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, তা নিয়েও তাঁর সামনে আলাপ করবেন না। তবে আচরণে পেশাদারত্ব বজায় রাখবেন অবশ্যই। এমনটা যেন মনে না হয় যে আপনি তাঁর ওপর বিরক্ত।
২. অন্যের প্রসঙ্গে আলাপ এড়িয়ে চলুন
এমনটা হতেই পারে যে তিনি আন্তরিকভাবে তাঁর কোনো খারাপ অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিচ্ছেন আপনার সঙ্গে, যেখানে আপনাদের তৃতীয় কোনো সহকর্মী জড়িত। এসব ক্ষেত্রে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। আপনার কথাটি পরবর্তী সময় ওই ব্যক্তির কাছে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হতে পারে। আদতে অন্যের অনুপস্থিতিতে তাঁর প্রসঙ্গে কোনো কথা বলা বা শোনা থেকে সব সময়ই বিরত থাকা উচিত।
৩. ভালো মানুষদের সঙ্গে চলুন
অফিসে যাঁরা কাজকেই প্রাধান্য দেন ও যাঁরা অন্যের বিষয়ে নাক গলান না, এমন মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। কাজের ক্ষেত্রে তাঁদেরই সহায়তা নিন। তবে তাঁদের সামনেও কারও সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না। তাতে আপনার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে।
৪. মনের শান্তিকে প্রাধান্য দিন
ব্যক্তিগত জীবনে অফিসের কোনো ঘটনার প্রভাব পড়তে দেবেন না। অফিসের ঘটনা অফিসেই শেষ করে দিন। অফিস থেকে বেরিয়ে ভুলে যান তিক্ততার কথা। উপভোগ করুন জীবনকে। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
৫. শান্ত থাকুন
তিক্ত বিষয়ে কথা বলতে হলেও শান্ত থাকুন। অফিস আবেগের জায়গা নয়। উত্তেজিত হবেন না। কথা বলার আগে সময় নিন। চট করে যেকোনো জবাব দিয়ে বসবেন না। অন্য কেউ অভদ্র আচরণ করলেও আপনি ভদ্রতার সীমা বজায় রাখবেন। না হলে পরবর্তী সময় অফিসের পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে আপনাকেও দোষী সাব্যস্ত করা হতে পারে।
৬. প্রমাণ সংরক্ষণ করুন
কেউ আপনার কাজের ক্ষতিসাধন করতে চেষ্টা করলে সেসব বিষয়ের প্রমাণ রাখতে চেষ্টা করুন। সরাসরি প্রমাণ না থাকলেও তারিখ, সময়সহ ঘটনাটি লিখে রাখুন নিজের মতো করে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়লে এগুলো কাজে আসবে।
৭. প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিকে জানান
দিনের পর দিন কারও দ্বিমুখী আচরণের কারণে আপনি যদি ভুক্তভোগী হন, তাহলে ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে রাখতে পারেন যে ওই ব্যক্তির কারণে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টা যেন নালিশ করার মতো মনে না হয়। ব্যক্তিগতভাবে আপনার খারাপ লাগার চেয়ে কর্মপরিবেশ নষ্ট হওয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করুন।
Publisher & Editor