বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

জ্বর জ্বর ভাব, কিন্তু জ্বর নেই, কেন এমন হয়?

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ২৬ জুন ২০২৫ |

জ্বর হলে আমরা সবাই টের পাই। অসুস্থ বোধ হয়, দুর্বল লাগে, তাপমাত্রা বাড়ে, শরীরে ম্যাজমেজে ভাব আসে ও কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। অনেক সময় মাথাব্যথা করে। থার্মোমিটারে তাপমাত্রা মেপে ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি পেলে জ্বর হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। জ্বরের কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ ও প্রদাহ। এ ছাড়া আরও কিছু রোগের লক্ষণ হিসেবে শরীরে জ্বর আসতে পারে। তবে কেউ কেউ প্রায়ই জ্বর অনুভব করেন, কিন্তু থার্মোমিটারে মাপলে তা জ্বরের সীমা অতিক্রম করে না। কেন এমন হয়? এটা কি কোনো রোগ? জ্বর না এলেও কেবল জ্বর জ্বর অনুভূতি হলে কি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত?

কেন এমন অনুভূতি হয়?
মানসিক দুশ্চিন্তা
যাঁরা নিয়মিত মানসিক দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাঁদের এ রকম হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে তাঁদের শরীরে স্ট্রেস রেসপন্স হয়, যেটা অনেক সময় জ্বরের মতো অনুভূতি দেয়।
হরমোনের পরিবর্তন
একটা পর্যায়ে গিয়ে নারীদের মেনোপজ হয়, মানে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। সে রকম সময়ে বা মেনোপজের আগে শরীরে বিভিন্ন বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, যা জ্বরের মতো মনে হয়।
পানিশূন্যতা
পানি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানিশূন্যতা হলে শরীরের বিপাকক্রিয়ায় সমস্যা হয়। এতে শরীরে বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আসে, এর মধ্যে জ্বর জ্বর ভাব অন্যতম।
ওষুধের প্রতিক্রিয়া
কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে জ্বর জ্বর ভাব হয়।

ভাইরাস সংক্রমণের শুরু বা শেষে
জ্বর ভাইরাস সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ। তবে শুরুর দিকে অর্থাৎ সংক্রমণের প্রথম এক থেকে দুই দিন জ্বর জ্বর ভাব থাকে, আবার জ্বরের প্রভাব যখন কমতে থাকে, সে সময়ও এমনটা হয়।

অটোইমিউন রোগ
কিছু অটোইমিউন ও বাতরোগ আছে, যেসবের ক্ষেত্রে জ্বর জ্বর ভাব একটা সাধারণ লক্ষণ। তবে এসব রোগের পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে, যেমন শরীরে ব্যথা বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, শরীরে র‍্যাশ ইত্যাদি।
থাইরয়েডের সমস্যা
থাইরয়েডের দুই ধরনের সমস্যায় (হাইপোথাইরয়েড ও হাইপারথাইরয়েড) এ রকম হতে পারে। হাইপোথাইরয়েডের রোগীরা সাধারণত শীত সহ্য করতে পারেন না। এই শীত শীত ভাবটাকে তাঁদের কাছে জ্বর মনে হয়। অন্যদিকে হাইপারথাইরয়েড রোগে শরীরে বেশি বেশি বিপাকপ্রক্রিয়া চলতে থাকে, যার প্রভাবে শরীরে জ্বর আছে, এ রকম অনুভূতি দেয়।

করণীয়
প্রথমে থার্মোমিটারে তাপমাত্রা ভালোভাবে মেপে নিশ্চিত হতে হবে, জ্বর আছে কি না। প্রয়োজনে দিনে দুইবার মেপে লিখে রাখুন। নিয়মিত পানি পান করুন। শরীরচর্চা ও নিয়মিত হাঁটা অব্যাহত রাখতে হবে। মানসিক চাপ কমাতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, জ্বর জ্বর ভাব যদি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে বা এর সঙ্গে অন্য আরও কিছু লক্ষণ থাকে, সে ক্ষেত্রে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor