লালবাগ কেল্লা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এটি পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। লালবাগ কেল্লার ইতিহাস অত্যন্ত রোমাঞ্চকর ও নানা ঘটনা প্রবাহে পরিপূর্ণ।
প্রথমে সম্রাট আওরঙ্গজেব এই দুর্গের নির্মাণের পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু তার পুত্র যুবরাজ শাহজাদা আজম ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুরুতে এই দুর্গের নাম রাখা হয়েছিল আওরঙ্গবাদ কেল্লা। তবে ১৬৮৪ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁনের কন্যা পরী বিবি মারা যাওয়ার পর দুর্গের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৮৪৪ সালে এলাকাটির নাম পরিবর্তন করে আওরঙ্গবাদ থেকে লালবাগ রাখা হয় এবং একইসঙ্গে কেল্লার নামও লালবাগ কেল্লা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
বর্তমানে এই কেল্লাটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।
লালবাগ কেল্লার প্রধান তিনটি স্থাপনার মধ্যে অন্যতম হল পরী বিবির সমাধি। এটি একটি বর্গাকৃতির মার্বেল পাথর দ্বারা নির্মিত সমাধি সৌধ। যার প্রত্যেক বাহুর দৈর্ঘ্য ২০.২ মিটার।
এর উপরে তামার পাত দিয়ে মোড়ানো একটি কৃত্রিম গম্বুজ রয়েছে। দুর্গটি এখন একটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা সুবেদার শায়েস্তা খাঁনের বাসভবন ও দরবার হল হিসেবে ব্যবহৃত হত। কেল্লার তিনটি ফটক থাকলেও দুইটি ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া এখানে রয়েছে লালবাগ দুর্গ মসজিদ, একটি সুন্দর ফোয়ারা, দেওয়ান-ই-আম, পানির ট্যাংক, তৎকালীন যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান ও তোপ সহ নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন।
বর্তমানে লালবাগ কেল্লা প্রতিদিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে এটি সাপ্তাহিক রবিবার বন্ধ থাকে ও সোমবার অর্ধদিবসের জন্য বন্ধ থাকে। বিশেষ সরকারি ছুটির দিনেও কেল্লা বন্ধ থাকে। তাই এখানে যাওয়ার আগে সময়সূচী যাচাই করে নেয়া উচিত।
ঢাকার অভ্যন্তরে যেকোনো স্থান থেকে লালবাগ কেল্লায় যাওয়া সহজ। আপনি গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার থেকে রিকশা, সিএনজি বা লেগুনায় করে কেল্লায় পৌঁছাতে পারবেন। যদি আপনি সদরঘাট থেকে আসেন, তবে রিকশা বা লেগুনায় বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে লালবাগ কেল্লায় যেতে পারেন। লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সৌন্দর্য দেখে একদিনের ভ্রমণ নিশ্চিতভাবে আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
Publisher & Editor