রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

কে পাচ্ছেন এবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ০১ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭

সুইডিশ একাডেমির সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও ভাষার প্রফেসর, অগ্রজ নোবেল পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক, সাহিত্য সংগঠনের প্রধান—এ ধরনের ব্যক্তিরা নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। তা ছাড়া লেখকের ভৌগোলিক অবস্থান, ভাষা-সংস্কৃতি, কখনো কখনো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং অবস্থান গুরুত্ব পেয়ে থাকে

নোবেলের অন্য পুরস্কারের চেয়ে সাহিত্যের পুরস্কার অনেক দিক থেকেই আলাদা। কারণ এ পুরস্কারের দিকে সর্বাধিক মানুষের কৌতূহলী নজর থাকে। মনোনয়ন পাওয়ার দিক থেকেও বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে সাহিত্য পুরস্কার।

সুইডিশ একাডেমির সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও ভাষার প্রফেসর, অগ্রজ নোবেল পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক, সাহিত্য সংগঠনের প্রধান—এ ধরনের ব্যক্তিরা নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। তা ছাড়া লেখকের ভৌগোলিক অবস্থান, ভাষা-সংস্কৃতি, কখনো কখনো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং অবস্থান গুরুত্ব পেয়ে থাকে। তবে এসব মানদণ্ডের কথা নোবেল কমিটি কখনো বলেনি। পাঠকদের আলোচনা থেকে পাওয়া অনুমান অনেক সময় সঠিক হয়ে যায়।

আবার কখনো কখনো পাঠকের কাছে একদমই অপরিচিত লেখককে দেওয়া হয় এ পুরস্কার। নোবেল পুরস্কার ঘিরে বাজির কারবারও চলে বেশ জোরে। কখনো কখনো তাদের অনুমানও ঠিক হয়ে যায়। কে পাচ্ছেন এবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারগত দুই বছরের মতো এবারও দেখা যাচ্ছে ল্যাডব্রক্সের বাজির তালিকায় থাকা প্রথম লেখক চীনের নিরীক্ষাধর্মী কথাসাহিত্যিক এবং সাহিত্য সমালোচক ক্যান জুয়ে।

মনে করা হয়, তাঁর কথাসাহিত্য নৃত্য পরিবেশনা এবং দৃশ্যমান শিল্পের মতো। আমেরিকার ঔপন্যাসিক এবং সম্পাদক ব্র্যাডফোর্ড মরো বলেন, ক্যান জুয়ে সমকালীন বিশ্বসাহিত্যে যাঁরা নতুনত্ব এনেছেন এবং আন্তর্জাতিক পাঠক ও সমালোচকদের কাছে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়ে আসছেন তাঁদের অন্যতম। প্রধানত ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লেখেন তিনি। চীনের লেখক মো ইয়ান নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এক দশকেরও বেশি আগে, ২০১২ সালে। সুতরাং আশা করা যেতে পারে, ক্যান জুয়ে এবার পুরস্কার পেয়ে যেতেও পারেন। চীনের লেখক ইয়ান লিয়াংকের নামও গুরুত্বপূর্ণ। ব্যঙ্গাত্মক সুর তাঁর লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য। তাঁর অনেক লেখা এযাবৎ নিষেধাজ্ঞার জালে আটকে গেছে। প্রধানত উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখেন তিনি।  চীনের কথাসাহিত্যের মেটাফিকশন ধল্যাডব্রক্সের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন জাপানের কথাসাহিত্যিক হারুকি মুরাকামি। পঞ্চাশটিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর লেখা। ফ্রাঞ্জ কাফকা পুরস্কার, ওয়ার্ল্ড ফ্যান্টাসি পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁর দেশের আরো কয়েকজন লেখক জাপানে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ জনপ্রিয়।  জাপানের সমসাময়িক কালের প্রভাবশালী নারী লেখকদের অন্যতম হিরোমি ইতো। প্রধানত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন ইতো। জাপানের বড় বড় সাহিত্য পুরস্কারের অনেকগুলো পেয়েছেন ইতো। জাপানের আরেকজন নোবেল-সম্ভাব্য লেখক হলেন ইওকো ওগাওয়া। কথাসাহিত্যিক ওগাওয়া জাপানের প্রধান সাহিত্য পুরস্কারসহ আন্তর্জাতিক একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে কবি-কথাসাহিত্যিক ইয়োকো তাওয়াদার নামও চলে আসে আলোচনায়। তিনি বর্তমানে বাস করেন জার্মানিতে। জাপানি ও জার্মান উভয় ভাষায়ই লেখেন তাওয়াদা। লেখার স্বীকৃতি হিসেবে জাপানের এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। মুরাকামির পরে বাজির তালিকায় আছেন আর্জেন্টিনার কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক সিজার আয়রা। তিনি বহুলপ্রজ লেখক। অনুবাদক হিসেবে সমান পরিচিত ও জনপ্রিয়। ফরাসি, ইংরেজি, ইতালীয়, ব্রাজিলীয়, স্প্যানিশ, মেক্সিকান এবং ভেনিজুয়েলীয় সাহিত্য অনুবাদ করে তিনি নিজের মৌলিক লেখার সমান গুরুত্ব অর্জন করেছেন।

গ্রিক কথাসাহিত্যিক ও কবি এর্সি সটাইরোপুলাস বাজির তালিকার চতুর্থ স্থানে আছেন। এ পর্যন্ত ডজনখানেকের ওপর কবিতা ও কথাসাহিত্যের বই প্রকাশ করেছেন এর্সি। তাঁর বই অনেক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। দেশের ও দেশের বাইরের কিছু পুরস্কারও পেয়েছেন। 

পঞ্চম স্থানে আছেন অস্ট্রেলিয়ার লেখক জেরাল্ড মারনেন। জীবিত বড় লেখকদের মধ্যে যাঁদের সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পাঠক একদমই কম জানেন তাঁদের অন্যতম জেরাল্ড মারনেন। উপন্যাস, কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা—সবই লেখেন তিনি।

ল্যাডব্রক্সের তালিকায় পাঁচজনের পরে থাকলেও বিশ্বসাহিত্যের পাঠকের খুব প্রিয় কানাডার লেখক কবি, কথাসাহিত্যিক ও সাহিত্য সমালোচক মার্গারেট অ্যাটউড। লিঙ্গ পরিচয়, ধর্ম, পুরাণ, ভাষার শক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন—এসব বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে অ্যাটউডের লেখায়। ১৮টি কবিতার বই, ১৮টি উপন্যাস, ১১টি প্রবন্ধের বই, ৯টি ছোটগল্পের সংকলন, আটটি শিশুতোষ বইসহ আরো অনেক প্রকাশনা রয়েছে বহুলপ্রজ এই লেখকের। বুকার পুরস্কারসহ বেশ কিছু মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার তিনি এরই মধ্যে পেয়েছেন। এবারের নোবেল পুরস্কারের সম্ভাব্য লেখক আছেন কানাডার কবি, প্রবন্ধকার, অনুবাদক, প্রফেসর এন কারসন। নিজ দেশের এবং টি এস এলিয়ট পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন কারসন। আরো আছেন আধুনিক রাশিয়ার মানবতাবাদী কথাসাহিত্যিক লুদমিলা উলিৎসকায়া। অন্য বছরের তুলনায় তাঁর নাম বেশি গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে এবার। আছেন রোমানিয়ার কথাসাহিত্যিক, কবি, প্রবন্ধকার ও সাহিত্য সমালোচক মারশিয়া কার্টারেস্কু। কেনিয়ার কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, প্রবন্ধকার, সম্পাদক ও শিক্ষাবিদ গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো বাজির তালিকায় যেখানেই থাকুন না কেন, পাঠকের কাছে তাঁর পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে বিশ্বসাহিত্যে সবচেয়ে অগ্রগণ্য লেখকদের অন্যতম গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো। 

‘কিং অব হরর’ বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের কথাসাহিত্যিক স্টিফেন কিংকে। কল্পবিজ্ঞান, অপরাধবিষয়ক এবং লোমহর্ষক কাহিনি লেখার কারণেই তাঁর এমন নাম। তাঁর বই এরই মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন কপির অধিক বিক্রি হয়ে গেছে। পাঠকের ভালোবাসায় তাঁদের দেশের আরো আছেন কে পাচ্ছেন এবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়েস ক্যারল ওটস, ডন ডেলিলো, এন টাইলার, রিচার্ড ফোর্ড, ডেভ এগারস, মেরিলিন রবিনসন প্রমুখ। আমেরিকার কথা কিংবা শুধু ইংরেজির কথা উঠলেও ডন ডেলিলোর নাম আসতেই পারে। সমসাময়িক মানুষের জটিল জীবনের বয়ান খুব নিচুস্বরে তুলে ধরেন তিনি।  কথাসাহিত্যিক জয়েস ক্যারল ওটস বহুলপ্রজ হলেও তাঁর লেখার মধ্যে প্রাণের উপস্থিতি বেশ জোরালো। আমেরিকার সমসাময়িক ভুবনের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা তাঁর লেখার প্রধান বিষয়। তাঁর নিজের ভাষাও বিষয়বস্তুর সঙ্গে দারুণভাবে মানানসই। এন্টিগুয়ান-আমেরিকান ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার জ্যামেইকা কিনকেইডও নোবেল পুরস্কারের জন্য বিবেচ্য হতে পারেন। আফ্রিকান এবং আফ্রিকান আমেরিকান স্টাডিজের হার্ভার্ড প্রফেসর কিনকেইড লিখে থাকেন উপনিবেশবাদ, ব্রিটিশ এবং আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদ, বর্ণবাদ, ঔপনিবেশিক শিক্ষা, লিঙ্গবাদ, শ্রেণি, ক্ষমতা—এসব বিষয়ে।

আইরিশ কথাসাহিত্যিক সেবাস্টিয়ান ব্যারি, জন বানভিল এবং ‘ব্রুকলিন’খ্যাত কলাম টোইবিন গুরুত্বপূর্ণ এবারের নোবেল পুরস্কারের জন্য। ব্যারির উপন্যাস ‘আ লং লং ওয়ে’ এবং ‘দ্য সিক্রেট স্ক্রিপচার’ তাঁকে দুবার ম্যান বুকার প্রাইজের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান দিয়েছে। বৈচিত্র্যে ভরা রুশ লেখক মিখাইল শিসকিনের জীবন। পরিচয়ের দিক থেকে তিনি রুশ-সুইস। মাতৃভাষা ছাড়াও তিনি জার্মান ভাষায় লেখেন। রুশ বুকার প্রাইজ, রুশ ন্যাশনাল বেস্ট সেলারসহ বেশ কিছু পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। পাঠকের কাছে তাঁর পরিচিতিও ব্যাপক। আরেকজন রুশ লেখক দিমিত্রি বাইকফ। তাঁকেও সম্ভাবনার তালিকায় রাখা যেতে পারে। রুশ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার লুদমিলা পেট্রুশেভসকায়ার নামটাও আসে সম্ভাবনাময় লেখক হিসেবে। শৈলীর দিক থেকে তাঁকে চেখভের সঙ্গে এবং নবাগতদের ওপর প্রভাব ফেলার দিক থেকে সোলঝেনিিসনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। অনেক দিন ধরেই আলোচনায় আছেন সিরিয়ার কবি আলী সাইদ অ্যাডোনিস। এ সময়ের আরব সাহিত্যের প্রধান কবিদের অন্যতম তিনি। তাঁর কবিতার মধ্যে রাজনীতির যথেষ্ট স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায়।

চিলির লেখক ইসাবেল আইয়েন্দে পেয়ে যেতে পারেন এবারের পুরস্কার। আন্তর্জাতিক পাঠকের বেশ প্রিয় কথাসাহিত্যিক ইসাবেল আইয়েন্দে। তিনি বিশ্ব পাঠকের কাছে স্প্যানিশভাষী সর্বাধিক পঠিত লেখকদের অন্যতম বলে বিবেচিত। লেখায় জাদুবাস্তবতার ব্যবহার এবং গল্প বলার অসাধারণ ক্ষমতা তাঁর। মাত্র তিন বছর আগে কবিতায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তবে ভাষার দিক বিবেচনায় ইংরেজির বাইরে দক্ষিণ কোরিয়ার কবি কো উনের সম্ভাবনা একেবারে কমে গেছে তা নয়। বরং কথাসাহিত্যের নোবেল পুরস্কারের বিশাল কাতারের মাঝে কবিতার রং আরো একবার লাগতে পারে। বয়স কম হলেও নাইজেরিয়ার চিমামন্দা নগোজি আদিচি পাঠকদের কাছে এরই মধ্যে লেখার মানের জন্যই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর লেখার ওজন কোনো দিক থেকেই কম নয়। আচেবের যোগ্য উত্তরসূরি তিনি। অগ্রজের অপ্রাপ্তি হয়তো তাঁর মাধ্যমেই পূরণ হতে পারে।

২০১৭ সালে ‘এ হর্স ওয়াকস ইনটু আ বার’ যে উপন্যাসটির জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পান ইসরায়েলি লেখক ডেভিড গ্রসমান। এবার তাঁর পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টা বেশ জোরালো। জন্মস্থান, সেখানকার রাজনীতি ও ইতিহাস তাঁর লেখক মানস তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের কথা তুলে ধরেছেন তাঁর ২০০৮ সালের ‘টু দি এন্ড অব দ্য ল্যান্ড’ উপন্যাসে। ইসরায়েলের অন্যতম জনপ্রিয় কবি অগি মিশোলও আন্তর্জতাতিক পাঠকের কাছে বেশ পরিচিত। নোবেল কমিটি তাঁকে বেছে নিলেও অবাক হওয়ার মতো কিছু হবে না।

এ বছর অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী ওয়ানি লেখক অ্যালেক্সিস রাইটও নোবেল পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন। অ্যালেক্সিস বিশ্বের অন্যান্য নামকরা পুরস্কার পেয়েছেন বেশ কয়েকটি : জেমস টেইট, মাইলস ফ্রাংকলিন পুরস্কার ও স্টেলা পুরস্কার অন্যতম। গত বিশ বছরে পরিবেশ ও মানুষের শিকড়ের কথা তিনি অনেক লিখেছেন। এ বছর ইউক্রেনের কিংবা রাশিয়ার ভিন্নমতাবলম্বী কোনো লেখকও পেতে পারেন নোবেল। সেরহি ভিক্টরোভিচ ঝাদান ইউক্রেনের কবি, ঔপন্যাসিক, অনুবাদক, প্রবন্ধকার, সংগীতজ্ঞ ও সমাজকর্মী। গত জুন মাসে তিনি ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ডের খারতিয়া ব্রিগেডে যোগ দেন। সম্ভাব্য আরেকজন ইউক্রেনীয় লেখক হলেন ইউরি আঁদ্রেখোভিচ; কবিতা, অনুবাদ ও কথাসাহিত্যের জন্য পাঠকমহলে পরিচিত। ১৯৮৫ সালে আরো দুজন সহকর্মীর সঙ্গে বু-বা-বু নামে কবিতাসংঘ গড়ে তোলেন। তাঁর লেখার অনুবাদ প্রকাশ করা হয়েছে পোল্যান্ড, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রিয়া, সুইডেন, রাশিয়া ও স্পেন থেকে। ইউক্রেনের কবি, গদ্য লেখক, সাংবাদিক ও প্রকাশক লিনা ভাসিলিভনা কোস্তেনকো সাবেক সোভিয়েত ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে পরিচিত। সিক্সটিয়ার কবিতা আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধি তিনি। ইউক্রেনের গীতিকবিতার ধারা ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। আরেকজন ইউক্রেনীয় লেখক ও বুদ্ধিজীবী আঁদ্রে কুরকভও নোবেল পুরস্কার পাওয়ার মতো পরিচিত। ইউক্রেনীয় ও রুশ উভয় ভাষায়ই লিখেন তিনি।

নোবেল পুরস্কারের প্রাপক হিসেবে সোমালিয়ার ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন ফারাহ, চীনের কবি বেই দাও, স্পেনের ঔপন্যাসিক হুয়ান মারসে, ইরানের কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ দৌলতাবাদী, বেলজিয়ামের কবি লিওনার্দ নোলেনস প্রমুখের যে কারো নাম উচ্চারিত হতেই পারে। পূর্ব আফ্রিকার অগ্রগণ্য লেখকদের অন্যতম নুরুদ্দিন ফারাহ উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ ও নাটক লেখেন। নিরীক্ষাধর্মী শৈলীর লেখক নুরুদ্দিন ফারাহ ইউরোপ-আমেরিকার অনেক সম্মানজনক পুরস্কার এরই মধ্যে পেয়েছেন। ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার তাঁর খুব কাছাকাছি ভৌগোলিক অবস্থানের তিনজন লেখককে দেওয়া হয়েছে বলে হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক, নাট্যকার পিটার নাদাস কিংবা আলোচিত লেখক লাজলো ক্রাজনাহরকাই এবার নোবেল পুরস্কার পাবেন বলে মনে হয় না। সেভাবেই ফরাসি কিংবা ব্রিটিশ লেখক-কবিদের নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনাও এবার কম। তবে নোবেল কমিটির খেয়ালের কারণে তাঁরাও কেউ পেতে পারেন পুরস্কার। 

আমরা যেমন আশা করি নোবেল কমিটির পছন্দও যদি তেমনই হয়, তাহলে মুরাকামি, থিয়োঙ্গো, অ্যাডোনিস, অ্যাটউড, ফারাহ, আইয়েন্দে, অমিতাভ ঘোষ, অরুন্ধতী রায় কিংবা রুশ, ইউক্রেনীয় অথবা আইরিশ সাহিত্যিকদের কেউ এবারের নোবেল পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor