গর্ভাবস্থায় নারীদের দেহে হরমোনের পরিবর্তন হয়। এ কারণে তাঁদের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে মুখগহ্বরের একটি সমস্যা হলো গর্ভকালীন প্রদাহ অথবা প্রেগন্যান্সি জিনজিভাইটিস। এর লক্ষণ সাধারণত দ্বিতীয় থেকে অষ্টম মাসের মধ্যে প্রকটভাবে দেখা দেয়।
কেন হয়
সাধারণত হরমোনের পরিবর্তনের কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা মাড়ির টিস্যুকে সংবেদনশীল করে তোলে। এ ছাড়া এ সময়ে চিনিযুক্ত ও টক স্বাদযুক্ত খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়, যার ফলে দাঁতে প্ল্যাক জমে মাড়িতে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও পুষ্টিহীনতার কারণে এটা হতে পারে।
লক্ষণ
মাড়ি লাল হয়ে ফুলে যায়।
মাড়ি নরম হয়ে দাঁত থেকে আলগা হয়ে যায়।
ব্রাশ করার সময় ও শক্ত খাবার খাওয়ার সময় রক্ত পড়ে।
মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং ব্যথা শুরু হয়।
জটিলতা
এ রোগের জটিলতা মা ও গর্ভের শিশু—উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারে।
মায়ের ক্ষেত্রে দাঁত ও মুখের হাড় ক্ষয় করতে পারে এবং পায়োজেনিক গ্রানুলোমা সৃষ্টি করে।
গুরুতর ক্ষেত্রে অকাল শিশুর জন্ম হতে পারে।
কম ওজনের সন্তান প্রসবের ঝুঁকি থাকে এবং সন্তান পুষ্টিহীনতায় ভোগে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের কারণে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায়।
চিকিৎসা
এই রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসক সাধারণত স্কেলিং, পলিশিং ও রুট প্ল্যানিং নামক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় উপযোগী নিরাপদ ওষুধ ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
প্রতিরোধে করণীয়
চিনিযুক্ত ও আঠালো খাবার কম খাওয়া।
দুই বেলা সঠিক নিয়মে দাঁত ও জিব পরিষ্কার রাখা।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ।
তামাক ও অ্যালকোহল পরিহার করা।
গর্ভধারণের আগে পূর্বপ্রস্তুতিমূলক দাঁত ও মুখের পরীক্ষা করা।
গর্ভাবস্থায় দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
Publisher & Editor