শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ছেলেরা কেন লম্বা হয়?

প্রকাশিত: ০২:৩৫, ০৫ জুলাই ২০২৫ |

আগেই বলে নিই, সব সময় যে ‘ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে লম্বা হয়’, তা কিন্তু মোটেই নয়। একে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেক মেয়েই তরতরিয়ে ছেলেদের চেয়ে লম্বা হয়ে যায়। তবে বেশির ভাগ সময় ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে একটু বেশিই লম্বা হয়। কেন হয়? তা নিয়েও আছে একগাদা গবেষণা।

মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কেন খাটো হয়, হুটহাট করে বলা অত সোজা নয়। নানা রকম ব্যাপারস্যাপার আছে। একটি দেশের আবহাওয়া ভালো হলে, ভালো খাবার খেলে, ধকল কম পোহাতে হলে মেয়েরাও লম্বা হয়ে ওঠে। আবার হরমোনের কারণেও মেয়েরা একটু কম লম্বা হতে পারে।

জানো হয়তো, ছেলেদের শরীরে থাকে টেস্টোস্টেরন নামের এক রকম হরমোন। সেই হরমোনটা ছেলেদের লম্বা হতে বেশ কাজে আসে। মেয়েদের শরীরে এটা থাকে না বললেই চলে। তাই লম্বা হওয়ার দৌড়ে তারা খানিকটা পিছিয়ে পড়ে।

আরো মজার ব্যাপার আছে। তোমরা তো জানো, ছেলে-মেয়ে সবার শরীরের কোষে ক্রমোজোম আছে। ক্রমোজোম দেখতে সুতার মতো। ছেলে-মেয়ে সবার কোষের ক্রমোজোম হয় একই রকম। তবে এক জোড়া ক্রমোজোম থাকে আলাদা।

মেয়েদের কোষে xx ক্রমোজোম থাকলেও ছেলেদের থাকে xy ক্রমোজোম। আর জানো তো x এর সঙ্গে একটা y ক্রমোজোম থাকে বলেই একজন ছেলে ছেলেমানুষ হয়ে ওঠে। বড় হলে তার গোঁফ হয়। গলা হয় গম্ভীর গমগমে। শরীর হয় শক্তিশালী আর তাগড়া! তাহলে বুঝলে তো y ক্রমোজোমটা বেশ কাজের। x এর সঙ্গে থেকে সে বসে থাকে না। অনবরত x এর ওপর মাতব্বরি করে। x কে দিয়ে এটাসেটা কাজ করিয়ে নেয়। অন্যদিকে মেয়েদের শরীরে থাকা xx ক্রমোজোমে ‍দুটি xx থাকে বলে একটা হয় ভারি আলসে। সে থাকে শুধু ঘুমিয়ে। মানে একদম কাজ করে না। করবেই বা কী করে, দুটো ক্রমোজোম একই রকম বলে তাদের উপাদানও এক। একজন ঘুমিয়ে না থাকলে দুটি x মিলে x মাত্রা দিত বাড়িয়ে। তখন শরীর গড়বড় হতো অনায়াসে।

এবার আসি কাজের কথায়। SHOX নামে এক রকম জিন (বংশগতি) আছে, জিনটা মানুষকে লম্বা বানাতে কাজ করে। এই জিনের আরেক নাম ‘শর্ট স্টেচার হোমোবক্স’। জিনটা আবার কোথায় থাকে জানো তো? আমাদের সেই xx আর xy ক্রমোজোমের একদম লেজের দিকে। দুই ক্রমোজোমে থাকলেও আবার সমানভাবে কাজ করতে পারে না সে। কেন পারে না বলো দেখি? আন্দাজ করো ভেবে।

xx ক্রমোজোমের একটা x কাজ করলেও বাকি x টা থাকে ঘুমিয়ে। তাই সেখানে থাকা ‍SHOX জিন পুরোদমে কাজ করতে পারে না। ওদিকে xy ক্রমোজোমে x আর y  দুটি ক্রমোজোমই কাজবাজে সবল থাকে। তাই সেখানে থেকে SHOX জিনটাও কাজ করতে পারে সমানতালে। ফলে xx ক্রমোজোমের চেয়ে xy ক্রমোজোমে SHOX এর প্রভাব যায় বেড়ে। এতেই সাধারণত ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে একটু বেশি লম্বা হতে পারে। যায় তরতর করে বেড়ে।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor