সুনির্দিষ্ট কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসার কারণে দেহে সংঘটিত অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই হলো অ্যালার্জি। অ্যালার্জির কারণে নাকের প্রদাহ হলে তাকে বলে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের মৌসুমি ধরনকে ‘হে ফিভার’ বলা হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে ভোগেন।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস যেকোনো বয়সে হতে পারে। আগে বলা হতো দুই বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত হয় না। কিন্তু এখন দেখা যায় কম বয়সেও নাকে প্রদাহ হতে পারে হয়। গর্ভাবস্থায় অ্যালার্জি–সর্দির মাত্রা বেড়ে যায়।
লক্ষণ
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
বারবার হাঁচি হওয়া।
নাক ও চোখ দিয়ে পানি পড়া।
চোখের চারপাশে ফোলাভাব।
নাকের ভেতরে চুলকানি।
কারণ
জিনগত ও পরিবেশগত কারণে অ্যালার্জি হয়। নানা কিছুর সংস্পর্শেই হতে পারে অ্যালার্জি। ধুলাবালু, ফুলের রেণু, তুলার আঁশ, প্রাণীর লোম, পাখির পালকের আঁশ, ঘাস, খড় প্রভৃতি অ্যালার্জির সাধারণ কিছু কারণ। এ ছাড়া চিংড়ি মাছ ও ইলিশ মাছের মতো কিছু খাবার খেলে বা সুগন্ধি ও প্রসাধনী ব্যবহারেও হতে পারে। এসব থেকে নাক, চোখ, গলায় প্রদাহ ও চুলকানি হয়।
যা করবেন
যেসব বস্তুর সংস্পর্শে এলে দেহে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হয়, তা এড়িয়ে চলা।
বাড়িতে পোষা প্রাণী ও কার্পেট না রাখা।
ঘর শুষ্ক রাখা, বালিশ ও গদির মতো গৃহস্থালি জিনিসপত্রে নির্দিষ্ট অ্যালার্জি– প্রতিরোধী কভার ব্যবহার করা।
শিশুরা যাতে ধূমপানের সংস্পর্শে না আসে তা খেয়াল রাখা।
চিকিৎসা
অ্যালার্জিজনিত রোগ কখনো সম্পূর্ণ সারে না। তবে চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। রোগী নিজেই বুঝতে চেষ্টা করবেন কিসে তাঁর অ্যালার্জি হয় এবং যতটা সম্ভব সেটি এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করবেন। জীবনযাত্রার পরিবর্তনই এ রোগ নিয়ন্ত্রণের মূলমন্ত্র। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিহিস্টামিন, নাকের ডিকনজেস্ট্যান্ট, লিউকেট্রিন রিসেপ্টর অ্যান্টাগনিস্ট ও নাকের স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অ্যান্টিহিস্টামিন নাকে ও মুখে নেওয়া যেতে পারে। মৌসুমি নাকের অ্যালার্জির ক্ষেত্রে যেসব স্থানে গেলে সমস্যা হয়, সেসব স্থানে যাওয়ার আগে অ্যান্টিহিস্টামিন নেওয়া ভালো। স্টেরয়েড স্প্রে নাকে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু অ্যান্টিহিস্টামিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তন্দ্রাচ্ছন্নতা। সে ক্ষেত্রে স্টেরয়েড, মন্টেলুকাস্ট, অ্যালার্জেন ইমউনোথেরাপি করা যেতে পারে।
নাকে লবণাক্ত পানি দিয়ে পরিষ্কার (ওয়াশ) করা।
নাকের অ্যালার্জির যথাযথ চিকিৎসা না নিলে বা অবহেলা করলে শতকরা ২৫ ভাগের অ্যাজমা হয়ে যেতে পারে। তাই এ রোগের সঠিক চিকিৎসা করা প্রয়োজন।
Publisher & Editor