মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

শপিং অ্যাডিকশন বা কেনাকাটায় আসক্তি কেন হয়, কীভাবে নিজেকে সামলাবেন

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ | ১২

আজকাল কেনাকাটা শুধু প্রয়োজন মেটানোর বিষয় নয়, অনেকের কাছে আনন্দেরও উৎস। নতুন কিছু কিনলে মন ভালো হয়ে যায়—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কেউ যদি কেনাকাটা দিয়ে দুঃখ ভুলতে চান, চাপ সামলাতে চান বা একাকিত্ব কাটানোর উপায় হিসেবে নেন, তখন সেটি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। একে বলা হয় শপিং অ্যাডিকশন বা কেনাকাটায় আসক্তি। জেনে নিন এই আসক্তি কেন হয় এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণের উপায়।

কীভাবে বুঝবেন আপনি কেনাকাটায় আসক্ত
সব সময় মনে হয়, কিছু একটা কিনতেই হবে।

কেনাকাটা বন্ধ করার চেষ্টা করেও পারেন না।

কেনাকাটার পর অপরাধবোধ বা দুঃখ হয়।

অপ্রয়োজনীয় জিনিস ঘরে জমতে থাকে।

ক্রেডিট কার্ড বা ঋণের চাপে পড়েন।

দুঃখ, চাপ বা হতাশার সময় কেনাকাটা করে মন ভালো করার চেষ্টা করেন।

এসব অভ্যাস শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ নয়, সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ।
কেন হয় এই আসক্তি
কেনাকাটায় আসক্তির পেছনে অনেক কারণ কাজ করে।

মানসিক অবস্থা

বিষণ্নতা, উদ্বেগ বা আত্মসম্মান কম থাকলে অনেকে কেনাকাটায় ভরসা খোঁজেন।

ভোক্তাবাদী সংস্কৃতি

সমাজ আমাদের শেখায়, নতুন জিনিস মানেই সুখ বা সাফল্য।

বিজ্ঞাপনের প্রভাব

বিজ্ঞাপন মানুষকে বোঝায়, এই জিনিস না কিনলে আপনি পিছিয়ে আছেন।

রিটেইল থেরাপি

দুঃখ বা চাপ কমাতে কেনাকাটাকে অনেকেই থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও সমস্যার সমাধান হয় না।

একমাত্র সন্তান বউ নিয়ে দেশের বাইরে থাকে, একা আমি কী করব

কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন
কেনাকাটায় আসক্তি একা সামলানো কঠিন হতে পারে। তবে কিছু অভ্যাস পরিবর্তনে উপকার পেতে পারেন—

বাজেট ঠিক করুন। প্রতি মাসে কত খরচ করবেন, লিখে রাখুন।

ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সীমিত করুন। চট করে কিছু কেনার সুযোগ নিজেই কমান।

মন ভালো রাখতে বিকল্প উপায় খুঁজুন। অবসরে বই পড়ুন, গান শুনুন, হাঁটুন, শখের কাজে মন দিন।

আপনার সমস্যার কথা পরিবার বা বন্ধুদের বলুন, তাঁরা সহায়তা করতে পারবেন।

থেরাপি নিন। মনোবিজ্ঞানী বা কাউন্সেলরের সাহায্য কার্যকর হতে পারে।

আর্থিক পরামর্শ নিন। বাজেট বা ঋণ ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞের সহযোগিতা নিন।
শেষ কথা

কেনাকাটা আনন্দদায়ক হতেই পারে। তবে তা যদি জীবনের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয়, তখন সচেতন না হয়ে উপায় নেই। নিজের অভ্যাসের প্রতি খেয়াল রাখুন, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। কারণ, সুস্থ মানসিক অবস্থা আর সুশৃঙ্খল অর্থনৈতিক জীবন—দুটিই আপনার সুখী জীবনের জন্য জরুরি।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor