দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার ও ভারতের বিশ্বকাপজয়ী কোচ গ্যারি কার্স্টেন। যদিও নামকরা এই কোচের পাকিস্তান অধ্যায়টা স্বস্তিকর ছিল না। মাত্র ছয় মাস পরই আচমকা বাবর-শাহিনদের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন কার্স্টেন। সম্প্রতি উইজডেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এর নেপথ্য কারণ জানিয়েছেন। তবে আবারও ডাক পেলে পাকিস্তানের কোচ হতে চান গ্যারি, এক্ষেত্রে জুড়ে দিয়েছেন শর্ত।
উইজডেন ক্রিকেট প্যাট্রিয়ন পডকাস্টে গ্যারি কার্স্টেন বলেন, ‘(পাকিস্তানে) শেষ কয়েক মাস ছিল টালমাটাল পরিস্থিতি। আমি দ্রুতই বুঝে গিয়েছিলাম যে, খুব বেশি সময় আর এখানে প্রভাব রাখতে পারব না। যখন আমাকে দলের সিলেকশন (কমিটি) থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো এবং দল গঠনে আমার কোনো ভূমিকা থাকবে না জানার পর আমার পক্ষে কোচ হিসেবে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। আমি সেখানে আর কোনো ইতিবাচক কর্তৃত্ব অনুভব করিনি।’
২০২৪ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের সাদা বলের (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) ফরম্যাটে কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কার্স্টেন। একইসঙ্গে সাবেক অস্ট্রেলিয়ান তারকা পেসার জেসন গিলেস্পি হন দলটির টেস্ট কোচ। দুজনেরই অল্প সময়ে পাকিস্তান অধ্যায়ের ইতি ঘটেছে। অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য পাকিস্তানের স্কোয়াড ঘোষণার পরই কার্স্টেন পদত্যাগ করেন নিজের ছয় মাসের দায়িত্ব শেষে। কারণ দুই কোচের কাউকেই দল নির্বাচনে রাখেনি পিসিবি। এরপর ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন গিলেস্পি। যাকে তিনি কোচিং ক্যারিয়ারের ‘তিক্ত স্বাদ’ বলে উল্লেখ করেন।
এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে পাকিস্তানের কোচ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন কার্স্টেন। এক্ষেত্রে অবশ্য তিনি কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। যা পূরণ হলে আবারও পাকিস্তানের কোচ পদে দেখা যাবে সাবেক এই প্রোটিয়া তারকাকে, ‘যদি আগামীকাল আমাকে ফের পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানানো হয়, আমি যাব। তবে আমার এই যাত্রাটা হবে খেলোয়াড়দের জন্য এবং সঠিক পরিবেশের অধীনে যেতে চাই। অন্যান্য এজেন্ডা নিয়ে ভাবার বয়স নেই আমার। আমি শুধু ক্রিকেট দলের কোচ হয়ে খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করতে চাই।’
গ্যারি কার্স্টেন আরও জানান, ‘ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারাই ক্রিকেট দল পরিচালনা করা উচিৎ। যখন এভাবে চলবে না এবং বাইরে থেকে প্রভাব বিস্তারকারী মাত্রাতিরিক্ত আওয়াজ আসে, তখন নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকা যে কারও জার্নি কঠিন হয়ে যায়। তখন আপনার মনে হতে পারে দলটাকে যেভাবে চালানো উচিৎ এবং যে উচ্চতায় নিতে পারবেন সেটা অসম্ভব। আমি পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ভালোবাসি, তারা অনেক অসাধারণ। আমার স্বল্প সময়ের অভিজ্ঞতায় তাদেরকে অনেক চাপ সামলাতে দেখেছি। যখন ম্যাচ হারে, তাদের জন্য অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং এটি তাদের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে।’
এমনকি বিশ্বের অন্য যেকোনো দলের পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বেশি চাপের মুখে পড়তে হয় বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই কোচ, ‘তারা (ক্রিকেটার) পারফরম্যান্সের চাপ অনেক বেশি সামলাতে হয়, যা বিশ্বের অন্য যেকোনো দলের চেয়েও বেশি। তবে তারা পেশাদার ক্রিকেটার, আমি পেশাদার ক্রিকেট কোচ। হার বা কোনো কারণে যখন দলের ভেতর অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়, তখন নিজের স্বাভাবিক প্রচেষ্টা দিয়েই সেটা কাটিয়ে উঠতে চাইবেন। সেখানে কারও কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। এভাবে একপর্যায়ে এই প্রতিভাবান ক্রিকেটাররাই আপনাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে।’
Publisher & Editor