পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতি কমে গেলে, কিংবা কখনো বীর্যে কোনো শুক্রাণুই শনাক্ত না হলে এবং স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নিয়মিত সহবাস করার পরও এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হলে ওই অবস্থাকে পুরুষ বন্ধ্যত্ব বা মেল ইনফার্টিলিটি বলা হয়। সব বন্ধ্যত্ব-দম্পতির ক্ষেত্রে ৩০-৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষজনিত কারণই দায়ী।
কারণ
● অতিরিক্ত ধূমপান করা।
● অ্যালকোহল, নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা।
● কম সক্রিয় জীবনযাপন।
● ওজনাধিক্য।
● অতিরিক্ত স্ট্রেস।
● হরমোনজনিত সমস্যা (টেস্টোস্টেরন, থাইরয়েড, প্রোলাকটিন)।
● জিনগত কারণ।
● সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া ইত্যাদি।
● শুক্রনালির ব্লকেজ।
● অণ্ডকোষের টিউমার, ভেরিকোসিলি, মামস অরকাইটিস।
● দীর্ঘ সময় গরম আবহাওয়ায় কাজ করা।
কীভাবে শনাক্ত করা হয়
বীর্য পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বন্ধ্যত্ব শনাক্ত করা সম্ভব। এর নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তিন দিন সহবাস বন্ধ রেখে বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। একটি বীর্য পরীক্ষার রিপোর্ট যদি খারাপ আসে তাহলে এক মাস পরে আরেকটি বীর্য পরীক্ষা করতে হবে। সেটিও যদি খারাপ আসে তাহলে অণ্ডকোষের আলট্রাসনোগ্রাফি ও হরমোন পরীক্ষা করতে হবে।
যা করতে হবে
ওজন কমানো, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাচলা করা, সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া, তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা।
স্ট্রেস কমানো এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা।
ধূমপান, মদ্যপান পরিহার করা।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতির উন্নতির জন্য কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট দেওয়া হয়। যেমন লেবোকারনিটিন, ভিটামিন সি, ই, ডি, বি কমপ্লেক্স, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড।
তিন মাস পর্যবেক্ষণের পর যদি শুক্রাণুর সংখ্যার উন্নতি না হয়, তাহলে ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন বা আইভিএফ/ইকসি করা যেতে পারে।
ভেরিকোসিলি (অণ্ডকোষের শিরা ফুলে যাওয়া) বা শুক্রনালি বন্ধ। এ-জাতীয় সমস্যা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে সার্জারি লাগতে পারে।
হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে এর চিকিৎসা করতে হবে।
যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির মাঝারি ধরনের সমস্যা থাকে, তবে সাধারণত আইইউআই এবং যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতির অনেক বেশি সমস্যা থাকে তবে ইকসি করা হয়।
কিছু ক্ষেত্রে বীর্যে কোনো শুক্রাণুই পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পারমিয়া বলা হয়, সে ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু নিয়ে ইকসি করা হয়।
Publisher & Editor