রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

হাঁটাহাঁটি বা সিঁড়ি ভাঙার সময় হাঁটুতে শব্দ হওয়ার কারণ কী, কখন চিন্তার কারণ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ | ২০

হাঁটুতে শব্দ হওয়া স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক? অনেক সময় হাঁটাহাঁটির সময় বা সিঁড়ি ভাঙার সময় হাঁটুতে অস্বাভাবিক শব্দ শোনা যায়। এই শব্দকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলে ক্রিপিটাস। সাধারণত এটি তেমন গুরুতর নয়, তবে কখনো কখনো এটি হাড় বা অস্থিসন্ধির রোগের ইঙ্গিতও হতে পারে।

হাঁটুতে কেন শব্দ হয়
কার্টিলেজ ক্ষয় (অস্টিওআর্থ্রাইটিস): বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটুর কার্টিলেজ বা তরুণাস্থি পাতলা হয়ে যায়। ফলে হাড়ের সঙ্গে হাড় ঘষা লেগে খচখচ শব্দ হয়। এর সঙ্গে ব্যথা, ফোলা বা শক্ত হয়ে যাওয়া দেখা দিতে পারে।

পুরোনো আঘাত বা ইনজুরি: লিগামেন্ট ইনজুরি, মেনিসকাস টিয়ার বা ফ্র্যাকচারের ইতিহাস থাকলে হাঁটু থেকে অস্বাভাবিক শব্দ হতে পারে।

অতিরিক্ত ওজন: অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে কার্টিলেজ দ্রুত ক্ষয় হয়ে শব্দ তৈরি হতে পারে।

গ্যাস বাবল ফাটার শব্দ: হাঁটুর ভেতরে সাইনোভিয়াল তরলে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ইত্যাদি গ্যাস থাকে। নড়াচড়া করলে এগুলো বাবল আকারে ফেটে শব্দ তৈরি করে। তবে এটা ক্ষতিকর নয়।

লিগামেন্ট বা টেন্ডনের নড়াচড়া: হাঁটু নড়াচড়ার সময় লিগামেন্ট বা টেন্ডন হাড়ের ওপর দিয়ে সরে যায়। সরে যাওয়ার সময় স্ন্যাপিং বা কটকট শব্দ হতে পারে।

কখন চিন্তার কারণ
শুধু শব্দ হলে এবং কোনো ব্যথা না থাকলে সাধারণত এটি বিপজ্জনক নয়। তবে কিছু উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

হাঁটুর সঙ্গে ব্যথা বা ফোলা থাকা

হাঁটু ‘লক’ হয়ে যাওয়া বা হঠাৎ আটকে যাওয়া।

হাঁটু অস্থিতিশীল মনে হওয়া।

দীর্ঘদিন ধরে শব্দের সঙ্গে হাঁটুর অসুবিধা থাকা।

করণীয়
পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করতে হবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

হঠাৎ অতিরিক্ত চাপ পড়বে এমন কাজ (যেমন ভারী ওজন ওঠানো) এড়িয়ে চলতে হবে।

বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম যেগুলো হাঁটুর আশপাশের পেশি শক্তিশালী করে, সেসব ব্যায়াম করা যেতে পারে।

সাইক্লিং বা সাঁতার হাঁটুর জন্য ভালো ব্যায়াম।

প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি বা প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।

হাঁটাহাঁটি করলে হাঁটুতে শব্দ হওয়া অনেক ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক ও ক্ষতিকর নয়। তবে যদি এর সঙ্গে ব্যথা, ফোলা বা চলাফেরায় অসুবিধা হয়, তাহলে এটি হতে পারে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা অন্য কোনো জয়েন্ট সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উত্তম।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor