স্তন ক্যানসার বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হওয়া ও অন্যতম প্রাণঘাতী ক্যানসার। এই ক্যানসারে স্তনের কোষ অস্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়ে টিউমারে পরিণত হয়। পুরুষদেরও স্তন ক্যানসার হতে পারে, তবে নারীদের মধ্যে এর হার অনেক বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০ লাখ নতুন স্তন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়। উন্নত দেশগুলোতে নিয়মিত স্ক্রিনিং, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা ও জনসচেতনতার কারণে তুলনামূলকভাবে বেঁচে থাকার হার বেশি। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ, যেমন বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হওয়ার হার কম। এ কারণে মৃত্যুর হারও বেশি।
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ হাজার নারীর স্তন ক্যানসার শনাক্ত হয়। বাংলাদেশে নারী ক্যানসার রোগীর প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেশি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত।
ঝুঁকি
বয়স বৃদ্ধি (৪০ বছরের পর ঝুঁকি বেশি)।
পরিবারে স্তন/ জরায়ু/ ডিম্বাশয় ক্যানসারের ইতিহাস।
হরমোনজনিত বা দীর্ঘ সময় হরমোন থেরাপি।
সন্তান না হওয়া বা দেরিতে সন্তান জন্মদান।
সন্তানকে বুকের দুধ পান না করানো।
স্থূলতা ও কায়িক শ্রমের অভাব।
ধূমপান ও মদ্যপান।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
লক্ষণ
স্তনে বা বগলের নিচে শক্ত গুটি অনুভব হওয়া।
স্তনের আকার বা আকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন।
স্তনের ত্বক মোটা, ভাঁজযুক্ত বা লালচে হওয়া।
স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা অন্য তরল নিঃসরণ।
স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া।
স্তনে বা বগলে অস্বাভাবিক ব্যথা বা অস্বস্তি।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
স্তন ক্যানসার পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। প্রতি মাসে নিজে নিজের স্তন পরীক্ষা করতে পারেন। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা। বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর নিয়মিত ম্যামোগ্রাফি করাতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ওজন। ধূমপান ও মদ্যপান করা যাবে না। সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
স্তন ক্যানসাররের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগ কোন পর্যায়ে শনাক্ত হয়েছে তার ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। চিকিৎসাপদ্ধতি রোগীভেদে ভিন্ন হতে পারে। চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যানসারের ধরন, পর্যায়, রোগীর শারীরিক সক্ষমতা ও বয়সের ওপর।
Publisher & Editor