বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

ভারতীয় সিরাপ খেয়ে গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ০৭ অক্টোবর ২০২২ | ৯৭

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় গত কয়েক মাসে কিডনি অকার্যকর হয়ে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের এমন মৃত্যুতে তদন্ত শুরু করে গাম্বিয়া সরকার। তারা দেখতে পায়, মারা যাওয়া শিশুরা একটা নির্দিষ্ট কোম্পানির কাশির সিরাপ খাওয়া পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ভারতের মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই সিরাপগুলো রপ্তানি করে।

ঘটনাটি নজরে আসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও)। তদন্তের পর তারাও একই কথা জানায়। এরপর ভারতে তৈরি চারটি কাশির সিরাপে ‘পণ্য সতর্কতা’ জারি করে ডব্লিওএইচও। নিয়ন্ত্রকদের এসব সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার পরামর্শ দেয় তারা।

মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানায় অবস্থিত। এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে তারা পণ্য রপ্তানি করে থাকে।

কয়েক ডজন শিশুর কিডনিতে গুরুতর সমস্যা ধরা পড়ার পর গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জুলাইয়ে প্রথম সতর্কতা জারি করেন।

এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে ভারতেও। কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা সিডিএসসিও। এর পরই হরিয়ানার সোনিপতে ওই কারখানায় যায় কেন্দ্র ও হরিয়ানা সরকারের ওষুধ পরীক্ষকদের একটি দল। সংগ্রহ করা হয় নমুনা।

এদিকে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরপরই নয়াদিল্লিতে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাটির কর্পোরেট অফিসে তালা ঝুলছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্থান টাইমস।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, বৃহস্পতিবার হরিয়ানা রাজ্যের সোনিপতে মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কারখানায় যায় হিন্দুস্থান টাইমস। সেখানে সংস্কারের কাজ চলছে উল্লেখ করে বাইরের কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। হরিয়ানা সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাম্বিয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই অনুসন্ধান শুরু করেছে সিডিএসসিও। তাদের তরফে গত সপ্তাহে এ ব্যাপারে হরিয়ানা সরকারকে সতর্ক করা হয়।

রাকেশ দাহিয়া নামে সোনিপতের এক ওষুধ পরীক্ষক জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে পাঁচটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য কলকাতার ‘সেন্ট্রাল ড্রাগস ল্যাবরেটরি’তে পাঠানো হয়েছে।

হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ জানিয়েছেন, যে চারটি কাশির সিরাপ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে, সেগুলি শুধুমাত্র রপ্তানির জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ভারতে বিক্রি করা হয়নি। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের কাশির সিরাপের সম্পর্কের বিষয়টি বুধবার জানান ডব্লিওএইচও-র মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।

তিনি বলেন, ‘সিরাপ চারটির নমুনা পরীক্ষার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। সিরাপগুলো হলো- প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কোফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মাকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।

‘সিরাপগুলোতে ‘অগ্রহণযোগ্য পরিমাণে’ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে। যা মানুষের জন্য বিষাক্ত। সেবনে পর এসব ‘মারাত্মক’ প্রমাণিত হতে পারে।’

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor