বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

সংগীতের আবহে উৎসব

প্রকাশিত: ০২:২৭, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮

কেউ শাড়ি পরে এসেছেন, কেউ পাঞ্জাবি—আজ চৈত্রসংক্রান্তির বিকেলে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উৎসবের রঙের ছটা লেগেছিল।

বিদায়ের আগে চৈত্রের শেষ খরতাপেও হাজির হয়েছিলেন সংগীতের অনুরাগীরা। বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা, খাসিয়া, গারোসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দর্শকেরা গলা মিলিয়েছেন, নেচেছেন। সংগীতের মুহূর্তগুলোতে উপভোগ করেছেন।

চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ ‘চৈত্রসংক্রান্তি ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। শেষে বিকেলে মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ড দলছুট। মুহুর্মুহু করতালিতে দলছুটকে অভিবাদন জানান দর্শকেরা।

জনপ্রিয় গান ‘দিন বাড়ি যায়’ দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে দলছুট। শেষ বিকেলটাকে রাঙিয়ে তোলে ব্যান্ডটি। সুরের মোহ ছড়িয়ে পড়ে, জড়িয়ে পড়েন শ্রোতারা। গানটির রেশ ফুরানোর আগেই ধরে ‘পরী’। গানটিও দলছুটের শ্রোতাদের মুখস্থ। সুরটাও চিরচেনা। এরপর ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’ ও ‘গাড়ি চলে না, চলে না’ দিয়ে পরিবেশনা শেষ করে ব্যান্ডটি।

হালে ওপেন এয়ার (খোলা আকাশের নিচে) কনসার্টের চল হারাতে বসেছে। কনসার্ট এখন চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খোলা আকাশের নিচে গান শুনতে শ্রোতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত ছিল। শিল্পকলা একাডেমি বলছে, চৈত্রসংক্রান্তিতে এবারই প্রথমবার সমতল ও পাহাড়ের ব্যান্ড নিয়ে এমন আয়োজন করছে শিল্পকলা একাডেমি।

এদিন পাহাড় ও সমতলের এক ডজন ব্যান্ডের পরিবেশনা ছিল। দলছুটের আগে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইমাং, খাসিয়া সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইউনিটি গান পরিবেশন করেছে। এরপর গেয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড চিম্বুক। ‘ফাইদি ফাইদি ও ববই বৈসু বেরেনি’ ও ‘ও জনি জং’ শিরোনামে দুটি গান পরিবেশন করেছে ইমাং।

ত্রিপুরা ভাষা ‘ইমাং’ শব্দের অর্থ স্বপ্ন। ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ করতে গাইছে ব্যান্ডটি। চিম্বুক পাহাড়ের নামে গড়েছে উঠেছে মারমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড চিম্বুক। ব্যান্ডটি সাংগ্রাই গান পরিবেশন করেছে।

বিকেল চারটায় ঢাকঢোলের তালে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এ সময় মঞ্চে আসেন ৫০ জনের মতো ঢুলি, বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢোলের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়েছেন শহুরে দর্শকেরা। এরপর লাঠিখেলা পরিবেশন করেন একদল লাঠিয়াল।

এদিন সন্ধ্যার পর ওয়ারফেজ, ভাইকিংস, অ্যাভোয়েড রাফা, লালন, আর্টসেল, স্টোনফ্রি, চাকমা সম্প্রদায়ের ব্যান্ড ইনভোকেশন ও গারো সম্প্রদায়ের ব্যান্ড এফ মাইনরের গাওয়ার কথা ছিল। আয়োজনের শুরুতে বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং শিল্পকলার সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জোনাকি জ্যোতি ও সাকিব।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor