রবীন্দ্রনাথ অফিসিয়ালি ব্রাহ্ম ধর্মের অনুসারী হলেও কালচারালি হিন্দুই ছিলেন। কালচারাল হিন্দুত্ব ত্যাগ করার মতো হীনম্মন্য তিনি ছিলেন না। হিন্দুত্ব নিয়ে তিনি প্রগতিশীল থাকতে পেরেছিলেন। তার সময়ে তার চেয়ে বড় প্রগতিশীল আর কে ছিলেন? আগাগোড়া হিন্দুত্ব ধারণ করা ধার্মিক রবীন্দ্রনাথ নিঃসন্দেহে তার সময়কালে ছিলেন সবচেয়ে অগ্রসর সাহিত্যিক এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নোবেলজয়ী কবি। তিনি সেক্যুলার ছিলেন না। এমনকি তার কোনো লেখায় সেক্যুলারিজমের নামগন্ধও খুঁজে পাওয়া যায় না।
উপরন্তু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দুত্ব নিয়ে তার ‘আত্মপরিচয়’ প্রবন্ধে লিখেছিলেন : ‘আমরা যে-ধর্মকে গ্রহণ করিয়াছি, তাহা বিশ্বজনীন তথাপি তাহা হিন্দুরই ধর্ম। এই বিশ্বধর্মকে আমরা হিন্দুর চিত্ত দিয়াই চিন্তা করিয়াছি, হিন্দুর চিত্ত দিয়াই গ্রহণ করিয়াছি। শুধু ব্রহ্মের নামের মধ্যে নহে, ব্রহ্মের ধারণার মধ্যে নহে, আমাদের ব্রহ্মের উপাসনার মধ্যেও একটি গভীর বিশেষত্ব আছেইÑ এই বিশেষত্বের মধ্যে বহুশত বছরের হিন্দুর দর্শন, হিন্দুর ভক্তিতত্ত্ব, হিন্দুর যোগসাধনা, হিন্দুর অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান, হিন্দুর ধ্যানদৃষ্টির বিশেষত্ব ওতপ্রোতভাবে মিলিত হইয়া আছে। আছে বলিয়াই তাহা বিশেষভাবে উপাদেয়, আছে বলিয়াই পৃথিবীতে তাহার বিশেষ মূল্য আছে।’
ব্রাহ্ম ধর্মের অনুসারী হলেও রবীন্দ্রনাথ কালচারাল হিন্দুত্বের বাইরে আর কোনো স্বাক্ষর রাখেননি; বরং বিশেষভাবে ছিলেন হিন্দু জাতীয়তাবাদী। তিনি নিজে চাইতেন যে, ভারতের মুসলমানরা হিন্দু জাতিবাদী পরিচয় ধারণ করুক। ভারতের কেউ ধর্মে খ্রিষ্টান কিংবা মুসলিম হলেও তাকে জাতিতে ‘হিন্দু পরিচয়’ ধারণ করতে হবেÑ এমন সাম্প্রদায়িক নীতি ছিল রবিঠাকুরের জাতিবাদী দর্শন! রবীন্দ্রনাথ তার এই হিন্দুরূপী মুসলমান ও হিন্দুরূপী খ্রিষ্টান থিওরিকে তর্কাতীত হিসেবে উল্লেøখ করেন উপরোক্ত ‘আত্মপরিচয়’ নামক প্রবন্ধে : ‘তবে কি মুসলমান অথবা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ে যোগ দিলেও তুমি হিন্দু থাকিতে পারো? নিশ্চয়ই পারো। ইহার মধ্যে পারাপারির তর্কমাত্রই নাই।’ এ ছাড়া, ‘শিবাজি উৎসব’ নামে রবীন্দ্রনাথের একটি আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদী কবিতা রয়েছে। সেটির একটি লাইন : ‘এক ধর্মরাজ্য হবে এ ভারতেÑ এ মহাবচন করিব সম্বল।’ অথচ ধার্মিক ও হিন্দুত্ববাদী রবীন্দ্রনাথকে সেক্যুলার বানিয়ে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা রবীন্দ্রস্বভাব ও রবীন্দ্রচিন্তার একেবারে বিপরীত। এভাবে উনিশ শতকে শুরু হওয়া এবং রবীন্দ্রযুগের বিশ শতক পর্যন্ত প্রবহমান বাংলার হিন্দু রেনেসাঁসের অভিঘাতে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে যে আধুনিক হিন্দুত্ববাদী মানস গড়ে উঠেছিল, সেটি আড়াল করার সেক্যুলার বঙ্গীয় ধূর্ত প্রচেষ্টা আমরা মোকাবেলা করতে চাই।
আমাদের দেশের একশ্রেণীর মুসলিম প্রগতিশীল প্রধানত ইসলামী ভাবধারার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সেক্যুলার প্রগতিশীল হওয়ার কোশেশ করেন। আর প্যারাডক্সিক্যালি ব্রাহ্মধর্মী হিন্দু রবীন্দ্রনাথ কিনা তাদের সেক্যুলার প্রগতিশীলতার আইডল! রবীন্দ্রজপ না করলে তাদের আচার-অনুষ্ঠানে সেক্যুলার আমেজ নাকি আসে না! এ দেশে যারা ধার্মিক রবীন্দ্রনাথকে সেক্যুলার বানিয়ে প্রগতিশীলতার রাজনীতি করছেন, তারা মূলত রবীন্দ্রচিন্তার শত্রু! বস্তুতপক্ষে, আজকে আইরনিক্যালি সেক্যুলার প্রগতিশীল বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের বড় রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে উঠেছেন রবীন্দ্রনাথ। আর এ অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে বাঙালি মুসলমানের ইসলামী ভাবচেতনা দমনে, সেক্যুলার ভণিতার মধ্য দিয়ে। যেমনÑ বাংলা সাহিত্যে হিন্দুত্ব থাকলে সেক্যুলারদের জাত যায় না; কিন্তু ইসলাম থাকলে যেন বজ্জাতি ঘটে যায়! ফলে ফররুখ আহমদ, আল মাহমুদ ও সৈয়দ আলী আহসানদের ব্রাত্য করে রাখা হয়। অথচ রবীন্দ্রনাথ তার কবিতা ও সাহিত্যের মৌলিক উপাদানগুলো নিয়েছিলেন হিন্দু ধর্মের ইতিহাস-ঐতিহ্য, বেদ, উপনিষদ, পুরাণ ও হিন্দু সংস্কৃতি থেকে। ইউরোপ থেকেও নিয়েছিলেন। তবে তথাকথিত প্রগতির বিপদ সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন। তার ছোটগল্প ‘প্রগতি সংহার’ পড়লে সেটি বুঝা যায়। কিন্তু নিজে ফারসি চর্চা করলেও, ফারসি মুসলিম কবিদের দ্বারা প্রভাবিত হলেও এবং ইসলামী ব্যক্তিত্বদের সাথে তার পরিচয় ও সম্পর্ক থাকলেও রবীন্দ্রনাথ সচেতনভাবে নিজের চিন্তা ও সাহিত্যকর্মকে ইসলাম ও মুসলিম উপাদান-ঐতিহ্য থেকে মুক্ত রেখেছিলেন। এ জায়গায় রবীন্দ্রনাথের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ বা বিরাগ নেই; বরং নিজের ধর্মীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে অবলম্বন করে তিনি যে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠতে পেরেছিলেন, তাতে আমরা মুগ্ধ ও অভিভূত! হিন্দুত্বকে ধারণ করেই তিনি বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম কবি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এ জায়গায় অত্যন্ত শক্তিশালী। যেমনটি শক্তিশালী মহাকবি মুহাম্মদ ইকবাল। উভয়ের কেউ সেক্যুলার ছিলেন না; বরং ধর্মানুরাগী ছিলেন। অন্য দিকে কবি হিসেবে রাজনৈতিক জায়গায় ইকবাল ও রবিন্দ্রনাথ থেকেও কাজী নজরুলের অবস্থান শক্তিশালী। কারণ, পুরো ভারতীয় উপমহাদেশে নজরুল ছিলেন হিন্দু-মুসলিম মিলনের অগ্রদূত। এটি ঐতিহাসিকভাবে তার রাজনৈতিক অবস্থান। একে সরাসরি আক্ষরিক বা নিছক ধর্মহীন সেক্যুলার পজিশন বলা ভুল হবে।
‘রবীন্দ্রানুভূতি’তে আঘাত দেয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। এমনকি এখানে আমি কবি ও সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথকে বিচার করছি না; বরং বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনের কাল থেকে আজতক রবীন্দ্রনাথের অবয়বকে ‘সেক্যুলার’ বানিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠার যে নিরন্তর প্রয়াস চলছে, সেটির প্যারাডক্স ও দেউলিয়াপনাকে বোঝার চেষ্টা করছি। সেই সাথে এ ম্যানিপুলেটেড রাজনৈতিক রবীন্দ্রনাথের প্যারাডক্স বা বৈপরিত্যগুলো উন্মোচন করার চেষ্টা করেছি আমরা। যদিও কবি ও সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথে আমরা মুগ্ধ; কিন্তু তাই বলে তাকে পূজনীয় করার পক্ষে নই।
রবীন্দ্রনাথকে এ দেশে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার দরকারে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানকে জাতীয় সঙ্গীত করা হয়েছিলÑ এমনটি মনে করেন ফরহাদ মজহার তার রচিত ‘রক্তের দাগ মুছে রবীন্দ্রপাঠ’ বইটিতে। তবে পাকিস্তানি সামরিক স্বৈরশাসকরা যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে রবীন্দ্রনাথের গান নিষিদ্ধ না করত এবং রবীন্দ্রসাহিত্যের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সেন্সরশিপ আরোপ না করত, তাহলে ‘সন্দেহ হয় রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়ার প্রবল রাজনৈতিক ইচ্ছা এ দেশের জনগণের মধ্যে জাগত কি না।’ (পৃষ্ঠা-৩৮) এ ছাড়া বইটিতে তিনি আরো লিখেছেন, ‘পারিবারিক ও ধর্মীয় পরিচয়, মনন, দর্শন, পঠন, পাঠন প্রভৃতির মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের মধ্যে যে মনোগাঠনিক প্রক্রিয়া ও প্রকাশ সচল ছিল তার সম্পৃক্তি হিন্দু ঐতিহ্যের সঙ্গে; কিন্তু বৌদ্ধ বা ইসলামী ঐহিত্যের সঙ্গে নয়। রবীন্দ্রনাথ কখনো ভোলেননি যে তিনি হিন্দু।’ (পৃষ্ঠা-৩৯) সুতরাং একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জাতিরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে তার গানকে স্রেফ রাজনৈতিক বিবেচনায় গ্রহণ করা হলো। আর কিছু বিবেচনা করা হয়নি। জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণে আমাদের এখানকার বৃহত্তর ইসলামী ঐতিহ্য, গণমানুষের চেতনা ও সংস্কৃতি, মূল্যবোধ বা এ জাতীয় কিছুকে আমলে নেয়া হয়নি। এমনকি কোনো দিক থেকেই ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি ধর্মনিরপেক্ষ ভাবধারারও নয় বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
এ ছাড়া গানটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও আবেদন আমলে নিলে এটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার যোগ্যতা রাখে কি না এমন প্রশ্ন অবশ্যই যৌক্তিক। কারণ ‘আমার সোনার বাংলা’ গানে রবীন্দ্রনাথ যে সোনার বাংলার কথা বলেন, সেটি ছিল দখলদার ব্রিটিশদের উপনিবেশিত অবিভক্ত বাংলাÑ যে সোনার বাংলার এ পূর্ব অংশে তথা বাংলাদেশে ব্রিটিশদের মুৎসুদ্দি শোষক জমিদার রবীন্দ্রনাথরা মুসলিম প্রজাদের শোষণ করতেন এবং লুটপাট করে পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় পাচার করতেন। যেভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে শোষণ করে পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থকড়ি পাচার করার কথা বলা হয়। সুতরাং, রবীন্দ্রনাথরা সেই সোনার বাংলা কাদের জন্য সোনা ফলিয়েছিল তা বুঝতে কষ্ট হয় না। নিজেদের অবৈধ জমিদারিত্ব, শোষণ ও বলশালী বর্ণহিন্দু জমিদার শ্রেণীর স্বার্থে বিগত শতকের প্রথম ভাগে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তিনি গানটি লিখেন। এ দেশের গরিব মজলুম মুসলিম প্রজাদের উন্নয়নের স্বার্থজড়িত সেই বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক রবীন্দ্রনাথরা মেনে নিতে পারেননি।
রবীন্দ্রনাথের ‘সোনার বাংলা’ ছিল সামন্তীয় জুলুমতন্ত্রের অধীন এবং দখলদার ব্রিটিশদের একটি উপনিবেশ। আর একাত্তরে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ গঠিত হয়েছিল জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের সম্মিলিত সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর দিল্লির উপনিবেশে বাংলাদেশকে পরিণত করার রাজনৈতিক চক্রান্তস্বরূপ প্রাথমিকভাবে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে এ রাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। এ গানের ঐতিহাসিক আবেদন বাংলাদেশের গণমানুষের চেতনা ও আকাক্সক্ষার বিরোধী। এ দেশে রবীন্দ্রনাথকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার অর্থ হলোÑ প্রকারান্তরে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদকে সম্প্রসারণ ও আধিপত্যবাদের অনুপ্রবেশের পথ সুগম করে দেয়া। নিছক রবীন্দ্রমুগ্ধতা ও সাহিত্যিক আবেগ বাদ দিয়ে রাজনৈতিক বিষয়গুলো বুঝতে হবে। রাজনৈতিক রবীন্দ্রনাথ এক বিষয়, আর কবি-সাহিত্যিক-সঙ্গীতজ্ঞ রবীন্দ্রনাথ ভিন্ন বিষয়। দু’টিকে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
হিন্দু-মুসলিম মিলনের অগ্রদূতরূপে আমরা নজরুলকে পেলেও রবীন্দ্রনাথকে ধার্মিক কালচারাল হিন্দু সাহিত্যিকরূপে পাই। খেয়াল করলে দেখা যাবে, হিন্দু-মুসলিম মিলনের ঐতিহাসিক অগ্রদূতরূপে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও নজরুলকে ঘিরে কিন্তু বিশেষ ধরনের কোনো সেক্যুলার প্রকল্প বা প্রজেক্ট দেখা যায় না। নজরুলের হিন্দু-মুসলিম মিলনের বিষয়টি তথাকথিত সেক্যুলারিজম নয়; বরং তা ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশ ঔপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে গণঐক্য ও গণলড়াই সংঘটিত করার রাজনৈতিক সংগ্রাম।
নজরুলের হিন্দু-মুসলিম মিলনের বিষয়টি ইসলামবিদ্বেষী রেডিক্যাল সেক্যুলার ভাবধারার সাথেও সম্পর্কিত না। সে জন্য সেক্যুলার প্রগতিশীলরা নজরুলের লাইনের সেক্যুলারগিরি করেন না; বরং তাদের লাইনের সেক্যুলারগিরির জন্য নজরুল অনুকূল নন। কারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অসংখ্য ভক্তিমূলক গানের রচয়িতা ও শ্যামাসঙ্গীতের স্র্রষ্টা নজরুলের মধ্যে একই সাথে ইসলামী ভাবচেতনাও শক্তিশালীরূপে হাজির। এ জায়গায় রবীন্দ্রনাথের চেয়েও নজরুল বড় ও মহান। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের জাতীয় কবি ও বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আড়ম্বরপূর্ণভাবে করা হয় না। পাছে রবীন্দ্রনাথের চেয়ে ইসলামিক নজরুল রাজনৈতিকভাবে আরো প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন কি না এ ভয়! তাই এ দেশে সেক্যুলার বিভ্রম তৈরি করে বাঙালি মুসলমানের ইসলামী ভাবচেতনার বিরুদ্ধে আপাত ধর্মনিরপেক্ষ পজিশনের নজরুলের চেয়েও একজন হিন্দু সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথকে ব্যবহার করে হিন্দুত্ববাদের এজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অধিকতর সুবিধাজনক। আমাদের আফসোস, এখানে মূলত রবীন্দ্রনাথের চরম অমর্যাদা ঘটে। তার ‘শ্রী’র হানি হয়। এখানে বঙ্গীয় সেক্যুলারদের দেউলিয়াত্ব উদোম হয়ে ধরা পড়ে।
Publisher & Editor