বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শখের কাচের বাসন; সংরক্ষণ, ব্যবহার ও যত্ন

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৫ মে ২০২৪ | ৫৫

ডাইনিংটেবিলের সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় কাচের বাসন। কাচের বাসন সংরক্ষণ, ব্যবহার ও যত্নের নানা দিক নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোক্তা বিভাগের অধ্যাপক শিমু লতা মৃধা। 
অভিজাত তৈজসপত্র হিসেবে সুনাম আছে কাচের বাসনের। নান্দনিক নকশা, ভালো মানের কারণে অনেকেরই প্রিয় কাচের বাসন।

মালিবাগের বিপণিবিতান মেহেরাব কুকারিজের কর্ণধার সৈকত জানালেন, শৌখিন ক্রেতাদের কাছে কাচের বাসনের চাহিদা বেশি। ডিনার সেট, গ্লাস সেট, বাটি, থালা, চায়ের কাপ, কেটলি, অ্যাশ ট্রে থেকে শুরু করে ফুলদানি ও শো পিচ হিসেবেও কাচের তৈজসপত্রের বেচাবিক্রি ভালো।
কাচের বাসনের ধরন

কাচ স্বচ্ছ ও ভঙ্গুর পদার্থ। ধাতব কার্বনেট ও চুনাপাথর দিয়ে তৈরি করা হয় কাচের বাসন।

সাধারণ, শক্ত, রঙিন, স্ফটিক, পাইরেক্স, তাপ সহনীয় এরকম নানা ধরনের কাচের বাসন পাওয়া যায়। বিভিন্ন গ্রেডের কাচের বাসন পাওয়া যায় বাজারে। এ গ্রেডের কাচের বাসন একদম নিখুত, মানসম্কন্ন হয়ে থাকে। এগুলোর বেশিরভাগই বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

বাংলাদেশে এটি কম বিক্রি হলেও বি ও সি গ্রেডের বাসন বেশি চলে। এগুলো সামান্য ত্রুটিযুক্ত হলেও ব্যবহারে মানানসই । অন্যদিকে ডি গ্রেডের কাচের বাসন কোনরকম কাজ চালিয়ে নেওয়ার মত জুতসই।
সংরক্ষণ

প্রতিবার ব্যবহার শেষে কাচের বাসন সব সময় ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর ভালো করে মুছে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।

শোকেসে দোকানের মত সাজিয়ে কিংবা একটার পর একটা গুছিয়ে রাখতে পারেন। দুই বাসনের মাঝে খবরের কাগজ বিছিয়ে দিতে পারেন।
এতে গড়িয়ে পড়বে না বা নড়াচড়া কম হবে। এতে কাচের বাসন দীর্ঘদিন অব্যবহূত অবস্থায় রেখে দেওয়া অুনচিত। নির্দিষ্ট মেয়াদের পর তাতে ফাটল ধরে। মাঝে মাঝে বের করে ব্যবহার করলে টেকসই থাকে।

ব্যবহার

কাচের বাসন সাবধানে ব্যবহার করা উচিত। নয়তো হাত থেকে পড়ে সহজেই ভেঙ্গে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ভেজা তেলতেলে হাতে কাচের বাসন ধরা যাবে না। শুষ্ক হাতে ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘদিন পর ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে ঠান্ডা পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ডিসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে খাবার রাখতে হবে। বের করে সরাসরি খাবার রাখা যাবে না। এতে বাসনটি দুভাগ হয়ে ফেটে যাওয়ার ভয়। অত্যন্ত গরম কোন খাবার কাচের পাত্রে না রাখা ভালো। এতেও পাত্রটিতে চিড় ধরতে পারে। কাচের বাসন ফ্রিজ থেকে বের করে সরাসরি ওভেনে দেওয়া যাবে না। আগে তাপমাত্রা স্বাভাবিক করে নিতে হবে। বেশি তাপযুক্ত কাচের পাত্রে হঠাত্ ঠান্ডা পানির স্কর্শ লাগানো যাবে না। এতেও বাসনটি ফেটে যেতে পারে। স্বাভাবিক তাপমাত্রা কাচের বাসনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী।

যত্ন

কাচের বাসনে মরিচা ধরে না না। তবুও যত্নবান হওয়া ভালো। এগুলো ধোয়ার সময় কখনোই খসখসে বা মেটালিক স্ক্রাবার দিয়ে ঘষা যাবে না। এতে স্ক্র্যাচ পড়ে যায়। ফোম বা নরম মাজনি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। বেশি তেল মসলাযুক্ত খাবার রাখলে ধোয়ার পর হলদে ভাব থাকে। তাই এক্ষেত্রে আগে সামান্য গরম পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ভিম লিকুইড বা ভিম বার দিয়ে মেজে স্বাভাবিক ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। ভিনেগার বা লেবুর রস দিয়ে ধুলেও বাসন দীর্ঘদিন চকচকে থাকবে।

কোথায় পাবেন কত দাম

গ্রেড বেধে দামের তারতম্য হয়ে থাকে। সাশ্রয়ী মূল্যে কাচের বাসন কিনতে চাইলে ঢাকার চকবাজারে মিডফোর্ড রোডের বিসমিলস্নাহ্ মার্কেটে যেতে পারেন। এছাড়া আনারকলি মার্কেট, নিউ মার্কেট, রাজধানী সুপার মার্কেট, ফার্মগেট ও কাওরান বাজারে রাস্তার আশেপাশে কাচের বাসন পাওয়া যায়।

Mahfuzur Rahman

Publisher & Editor